৬৬ থেকে ৩৫ লাখে!

দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ পশুর হাট মইজ্জারটেক গত অর্থবছরের তুলনায় এবার অর্ধেক দরে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এতে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাতে পারে। অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা মইজ্জারটেক পশুর হাট গত অর্থবছরে ৬৬ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে সাড়ে ৩৫ লাখ টাকা দর উঠেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নগরের কাছে এবং যাতায়াত সুবিধা ভালো বলেই জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ সেখানে পশু কিনতে যান। সারা বছর এখানে বেচাকেনা ভালো হয়। এরপরেও এবার ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় হাটের ইজারা পেতে যাচ্ছেন জনৈক আবদুল করিম। তিনি উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত অর্থবছরের তুলনায় অর্ধেক দরে তাঁকে পশুর হাটটি ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে জানান, সিন্ডিকেট করে পশুর হাটটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। পেছনে প্রভাবশালী কেউ কেউ কলকাঠি নাড়ছেন বলে তাঁদের ধারণা।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা নাম প্রকাশ না করে জানান, ইজারার জন্য ১৩ জন ফরম কিনলেও তিনজন কেবল জমা দেন। বাকি কেউ জমা দেননি। সবার অংশগ্রহণ না থাকার পেছনে একটি সিন্ডিকেট সুক্ষ্মভাবে কাজ করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ কারণে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে আবদুল করিম পশুর হাটটির ইজারা পেতে যাচ্ছেন। আবার দরপত্র আহ্বান করে পশুর হাটের ইজারা দিতে দাবি তোলেন এই পক্ষ।

ইজারা পেতে যাওয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল করিম গত অর্থবছরের চেয়ে এবার ইজারা মূল্য কম হওয়া প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতবার হয়তো লোকসান দিয়েছিলেন ইজারাদার। এ কারণে এবার ইজারা দর কমে গেছে।’ এর বেশি তিনি কোনো ব্যাখ্যা দেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, ‘গত অর্থবছরের চেয়েও এবার ইজারার দর কম ওঠে। তাই আমরা তিনটি অর্থবছরের গড় দর ধরে সর্বনিম্ন দরদাতাকে ইজারা দেওয়ার কথা ভাবছি।’

ইউএনও সৈয়দ শামসুল আরও বলেন, তবে ইজারা দেওয়ার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নতুন করে দরপত্র আহ্বান করার পেছনে আইনি প্রক্রিয়াও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিমত, আবার দরপত্র আহ্বান করা হলে গত অর্থবছরের মতো ইজারা দর পাবে প্রশাসন। কারণ গত অর্থবছরের তুলনায় এবার পশুর বেচাকেনার সংখ্যা আরও বাড়ছে।