অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ

অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় এক মাসের বেশি সময় ধরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা। যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে দুটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এতে প্রতি কিলোমিটারে ১০ টাকা হারে ভাড়া নেওয়া হয়। রাজবাড়ী থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত ভাড়া ৪ হাজার ৪০০ টাকা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত ভাড়া ৬৬০ টাকা। তবে রোগী নিয়ে আরও বেশি ঘোরাঘুরি করলে কিলোমিটারপ্রতি অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তেল বাবদ বকেয়া ছিল ১৪ লাখ ৩২ হাজার ২৫৬ টাকা। আর চলতি বছরের বকেয়া পড়েছে ৬ লাখ ৬৯ হাজার ২২০ টাকা। সব মিলিয়ে বকেয়া ২১ লাখ ১ হাজার ৪৭৬ টাকা। অপরদিকে গত অর্থবছরে আয় ছিল ১১ লাখ ২৭ হাজার ২৬০ টাকা। আর চলতি বছর আয় হয়েছে ৬ লাখ টাকা। সাধারণত স্থানীয় তেলের পাম্পের সঙ্গে চুক্তি করে জ্বালানি তেল নেওয়া হয়। বকেয়া থাকায় তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে পেট্রলপাম্প।

হাসপাতালের হিসাব বিভাগের প্রধান সহকারী মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, অ্যাম্বুলেন্স থেকে যা আয় হয়, তা চালান আকারে সরকারি কোষাগারে জমা হয়। গাড়ি চালানোর জন্য তেলের দাম বাবদ আলাদা বরাদ্দ আসে। গত বছরের বরাদ্দ ঠিকমতো না পাওয়ায় কিছুদিন অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ ছিল। সাধারণত পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা অ্যাম্বুলেন্সের তেল বাবদ পাওয়া যায়। বাকি টাকা চেষ্টা-তদবির করে আনতে হয়।

অ্যাম্বুলেন্সের চালক মাইনুদ্দিন মোল্লা বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। ফরিদপুরে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে সাড়ে ছয় থেকে সাড়ে সাত শ টাকা খরচ হয়। অপরদিকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে লাগে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।

শহরের এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমার এক আত্মীয়কে জরুরি প্রয়োজনে শহরে নিতে হবে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স নেই। ভাড়া বেশি হলেও বাইরের অ্যাম্বুলেন্সও পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না।’

মূলঘর এলাকার বাসিন্দা সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমার এক স্বজনকে ফরিদপুর পাঠানো হয়। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে খুব বিপাকে পড়তে হয়েছিল। রাতে় অ্যাম্বুলেন্স তো পাওয়াই যায় না।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক স্বপন কুমার কুণ্ডু বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রয়েছে। অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ না পেলে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করা সম্ভব হবে না।