গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিকাশে সহযোগিতা দিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেছেন, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের বৃহত্তর ভূমিকা পালনে সহযোগিতা করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র।

আজ রোববার প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি এদিন সকালে প্রথম আলো কার্যালয়ের এলে তাঁকে স্বাগত জানান পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান। এরপর প্রগতি ইন্স্যুরেন্স ভবনে প্রথম আলোর বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখার পর পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন।

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ের সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যম ও মতাপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন। তাঁর মতে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর্ল মিলার বলেন, মত প্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর জোর দিতে চাই। আমার মতে, এ বিষয়গুলো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমর্থন করে।
এই প্রেক্ষাপটে মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে তিনি কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কীভাবে এ বিষয়ে সহযোগিতা করা যায় সেটিও তাঁর ভাবনায় আছে বলে জানান।

রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে প্রথম আলো কার্যালয় ঘুরিয়ে দেখান সম্পাদক মতিউর রহমান। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে প্রথম আলো কার্যালয় ঘুরিয়ে দেখান সম্পাদক মতিউর রহমান। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

বাংলাদেশে দায়িত্ব নেওয়ার আগে পূর্বসূরি মার্শা বার্নিকাটের দেওয়া শেষ পরামর্শ কি ছিল জানতে চাইলে আর্ল মিলার বলেন, ‘মার্শা বার্নিকাটই আমাকে বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন। বাংলাদেশে তাঁর সময়টা কত সুখকর ছিল, বিশেষ করে যেখানেই গেছেন সেখানেই এ দেশের মানুষের হৃদয়ের উষ্ণতা তাকে মুগ্ধ করেছে এটা তিনি বারবার বলেছেন। এখনো হৃদয়ে তাঁর বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশ মানে গুলশান কিংবা মার্কিন দূতাবাস নয়। বাংলাদেশ মানে ভিডিওতে রাজশাহীর চরের যে কিশোরীকে দেখেছি সেটাই। যখন পরীক্ষায় দারুণ ফল করার পর আনন্দে চোখ বেয়ে পড়ছে কিশোরীর দু’গাল বেয়ে। কে জানে ভবিষ্যতে কতটা পথ সে পাড়ি দেবে!’

রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে প্রথম আলো কার্যালয় ঘুরিয়ে দেখান সম্পাদক মতিউর রহমান। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে প্রথম আলো কার্যালয় ঘুরিয়ে দেখান সম্পাদক মতিউর রহমান। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

আর্ল মিলার বলেন, বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিসরে, এ দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি সেটা আমার ভাবনায় রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থেই দুই ক্ষেত্রে এক সঙ্গে উন্নতি করতে হবে। 

চীন আর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক লড়াইয়ের কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেশি হবে বলে পূর্বাভাষ দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক। এ নিয়ে জানতে চাইলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার বলেন, লোকজন বলে থাকে চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় আছে যুক্তরাষ্ট্র।  অবকাঠামো উন্নয়নে দক্ষিণ এশিয়ার ২৬ ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ দরকার। চীনের বিনিয়োগে যদি স্বচ্ছতা থাকে তবে প্রতিযোগিতাটা সুস্থ হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি কোনোভাবেই চীনের অঞ্চল আর পথের উদ্যোগের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে না। আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্রের বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুক। তেমনি এটাও চাই বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করতে যাক যুক্তরাষ্ট্রে।

প্রথম আলোর কর্মীদের সঙ্গে আর্ল মিলার। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
প্রথম আলোর কর্মীদের সঙ্গে আর্ল মিলার। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ