ঝড়ে কমলগঞ্জে বিদ্যুৎ নেই, পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

কালবৈশাখী ঝড়ে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা। গতকাল রোববার সকালে আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে কমলগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা। সেখানে গতকাল সন্ধ্যা থেকে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও গ্যাস নির্ভর যানবাহন। ঝড়ে নয়টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রায় শতাধিক ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়।

কালবৈশাখী ঝড়ে পতনঊষার ইউনিয়নের পশ্চিম পতনঊষার, উত্তর পতনঊষার, মাইজগাঁও, ধুপাটিলা, শহীদনগর বাজারসহ কয়েকটি গ্রামের বাড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়। বিপুলসংখ্যক গাছ উপড়ে পড়ে। ইউনিয়নের সোহাগ মিয়া, কনা মিয়া, হাবিব উল্ল্যা, আব্দুস সালাম, মাসুক মিয়া, রমজান আলীর ঘর সহ নয়টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। পতনঊষার উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় শতাধিক ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়।

বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে রোববার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে পুরো কমলগঞ্জ উপজেলা। আজ সোমবার সকাল থেকে শুরু হচ্ছে ২০১৯ সালের উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের মাদ্রাসা পরীক্ষা। বিদ্যুৎ না থাকায় গতকাল সন্ধ্যা থেকে পরীক্ষার্থীদের হারিকেন, মোমবাতি ও চার্জার বাতি জ্বেলে পড়াশোনা করতে দেখা গেছে।

গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে মাঝারি ধরনের টানা বৃষ্টি শুরু হয়। আজ সোমবার সকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৃষ্টি পড়ছিল।
বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় কমলগঞ্জে গ্যাস ফিলিং স্টেশন কোনো যানবাহনে গ্যাস সরবরাহ করতে পারেনি। বেশির ভাগ গ্যাস নির্ভর যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাস্তায় তেমন যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি।

মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) ওবায়দুল হক জানান, ঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে। খুঁটি থেকে ট্রান্সফরমার পড়ে গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনে পড়ে গেছে।
ওবায়দুল হক বলেন, বিদ্যুৎকর্মীরা বিদ্যুৎ লাইন মেরামত করে গতকাল বিকেল চারটায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে সক্ষম হন। তবে বিকেল সাড়ে চারটায় আবহাওয়া আবার খারাপ হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ আর চালু করা যায়নি।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে বসতঘর বিধ্বস্তসহ বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টা ধরে কমলগঞ্জ অন্ধকারাচ্ছন্ন বলা যায়। আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর তো কারও হাত নেই।