বোমা মেশিন দিয়ে পাথর তোলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

পঞ্চগড় সদর উপজেলা ও তেঁতুলিয়া উপজেলার নদী ও সমতল ভূমি থেকে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর তোলা বন্ধের দাবিতে গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করা হয়।  প্রথম আলো
পঞ্চগড় সদর উপজেলা ও তেঁতুলিয়া উপজেলার নদী ও সমতল ভূমি থেকে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর তোলা বন্ধের দাবিতে গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করা হয়। প্রথম আলো

পঞ্চগড়ের সদর উপজেলা ও তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন নদী ও সমতলভূমি থেকে অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে পাথর তোলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে পরিবেশ আন্দোলন পঞ্চগড় নামে একটি সংগঠন। গতকাল জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে পরিবেশ আন্দোলন পঞ্চগড় ছাড়াও বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন, পঞ্চগড় ডিবেট অ্যাসোসিয়েশন, পঞ্চগড় জেলা পাথর বালু ও ভাসা কাঠ উত্তোলনকারী শ্রমিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মী, শিক্ষক, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় ওই সংগঠনের নেতারা নিষিদ্ধ বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধের জন্য প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোমা মেশিনে পাথর উত্তোলন বন্ধ না হলে রোড মার্চসহ তেভাগা ও গান্ডি আন্দোলনের মতো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

মানববন্ধনে পরিবেশ আন্দোলন পঞ্চগড়ের আহ্বায়ক জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিক, সদস্যসচিব ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব, পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক ফজলে নুর, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বিপেন চন্দ্র রায়, পঞ্চগড় ডিবেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুহুল আমিন প্রধান মানিক প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, পঞ্চগড়ের বিপর্যয় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ডেকে আনার জন্যই প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতের অন্ধকারে একটি চক্র কয়েক শ নিষিদ্ধ বোমা মেশিন দিয়ে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন নদী ও সমতলভূমি থেকে পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছে। এতে সমতলভূমির উর্বরতা নষ্ট, নদীর গতিপথ বন্ধ এবং ভূমিকম্পের আশঙ্কার সৃষ্টি হচ্ছে।

তেঁতুলিয়ায় করতোয়া, ডাহুক, সাও, পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা নদী এখন বোমা মেশিন চক্রের দখলে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন শক্ত প্রদক্ষেপ নিলে কেউ বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের সাহস করত না। এই চক্রের সদস্যরা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রচ্ছায়ায় তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করায় তেঁতুলিয়া ও পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার গভীর গর্ত তৈরি হচ্ছে। মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পেই এসব এলাকায় মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।

এ সময় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ করেন।

মানববন্ধন থেকে প্রশাসনকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘বোমা মেশিন বন্ধে পুলিশকে নিয়ে আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ধরনের আন্দোলনকে আমরাও সাধুবাদ জানাই। এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ সম্পৃক্ত হলে সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং বোমা মেশিন বন্ধে তা সহায়ক হবে।’