বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে লেক

লেকের পানিতে সরাসরি ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। গত বুধবার উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টর লেকের অংশ থেকে তোলা।  ছবি: প্রথম আলো
লেকের পানিতে সরাসরি ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। গত বুধবার উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টর লেকের অংশ থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টর অংশে লেকের পানিতে প্রতিদিন সরাসরি ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য। এতে বর্জ্য ফেলা অংশটি ধীরে ধীরে ভরাট হচ্ছে। দূষিত হচ্ছে পানি। বর্জ্যের পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে চারদিকে।

সেক্টরবাসীর অভিযোগ, লেকপাড় সেতু, রাস্তা ও ফুটপাতের দোকানের ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন রাতের অন্ধকারে ময়লা-আবর্জনা লেকে ফেলে দেন। উত্তরা ১৩ ও ৭ নম্বর সেক্টরের মাঝখানে লেকের অংশে এভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পলিথিন, চানাচুর-বিস্কুটসহ বিভিন্ন খাবার সামগ্রীর প্যাকেট, আপেল ও অন্যান্য ফল মোড়ানোর পলিথিন, ককশিটের বাক্স, ডাবের খোসাসহ হরেক রকম আবর্জনা সরাসরি লেকের পানিতে ফেলা হচ্ছে। এসব বর্জ্য জমে-পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আবর্জনা জমতে জমতে লেকের ওই অংশে পানির স্তর থেকে তা উঁচু হয়ে আছে। ১৩ নম্বর সেক্টর অংশের লেকপাড়ের হাঁটার রাস্তায় সুন্দর পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও লেকের দক্ষিণ-পূর্ব অংশের ওই বর্জ্য ফেলার অংশে সৃষ্ট দুর্গন্ধের কারণে দূর থেকেই ফিরে যান হাঁটতে আসা অনেকে।

উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা রেজওয়ানা চৌধুরী বলেন, ‘হাঁটতে এলেও আবর্জনার দুর্গন্ধের কারণে দক্ষিণের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যাই না।’ প্রতিনিয়ত ময়লা-আবর্জনা ফেলায় লেকের ওই অংশের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ১৩ ও ৭ নম্বর সেক্টরের মধ্যবর্তী লেকপাড় সেতুর ওপরের রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে নিয়মিত কাঁচা সবজি, ফলমূল, মাছের বাজার বসে। বিকেল গড়াতেই বসে চটপটি ও ফুচকার দোকান। সব মিলিয়ে ওই অংশে অর্ধশতাধিক ভ্রাম্যমাণ দোকান নিয়মিত বসে।

সেক্টরের বাসিন্দারা জানান, ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা সারা দিন বেচাবিক্রির পর লেকের ওই অংশে দোকানের ময়লা-আবর্জনা ফেলে রেখে যান। এভাবেই লেকটি বর্জ্য ফেলার জায়গায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, সেতুর অবৈধ দোকানিদের নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। কিন্তু কিছুদিন পরেই ব্যবসায়ীরা আবার সেই জায়গা দখল করে ব্যবসা শুরু করে আর রাতের অন্ধকারে লেকে ময়লা ফেলে দিয়ে যান।

লেকে সরাসরি বর্জ্য ফেলার বিষয়ে রাজউক লেক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে সরাসরি আবর্জনা লেকে ফেলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টর ডিএনসিসির নতুন ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। ওয়ার্ডটির নতুন নির্বাচিত কাউন্সিলর শরীফুর রহমান বলেন, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতাকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন কাজের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ওই জায়গাটি পরিদর্শন করে সেখানে আবর্জনা ফেলতে মৌখিকভাবে সবাইকে সতর্ক করে নিষেধ করা হবে। কেউ অমান্য করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।