অন্যকে দিয়ে সাজা খাটানো ওফাজের খোঁজে পুলিশ

ওফাজ উদ্দিন
ওফাজ উদ্দিন

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় নিজের সাজা অন্যকে দিয়ে খাটানো ওফাজ উদ্দিনের খোঁজে মাঠে নেমেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর পরিবারের লোকজনও পলাতক রয়েছেন। কারাবন্দী জাহাঙ্গীরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার বিশ্বাসপাড়া এলাকার ওফাজ উদ্দিনের নামে কালিয়াকৈর থানায় বন বিভাগের করা দুটি মামলায় পরোয়ানা আছে। একটি মামলায় তাঁর দুই বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে। মামলার আরেক ধারায় আরও এক বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তাঁর। এ ছাড়া বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা আরেকটি মামলায় ওফাজের বিরুদ্ধে পরোয়ানা আছে।

কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমান জানান, ওফাজকে অনেক দিন ধরে খুঁজছিল পুলিশ। কিন্তু গতকাল পত্রিকায় খবর বের হয়, ওফাজ উদ্দিনের পরিবর্তে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক যুবক জেল খাটছেন। এমন সংবাদে পুলিশ সদস্যরা অবাক। পরে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মা ও বাবার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখন পুলিশ ওফাজকে আরও জোরেশোরে খুঁজতে শুরু করেছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আজ–কালের মধ্যেই কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দেখা করবেন পরিবারের সদস্যরা।

জাহাঙ্গীর আলম
জাহাঙ্গীর আলম

এদিকে বদলি সাজা খাটার কারণে ওফাজের আইনজীবী ধীরেশ চন্দ্র সরকারকে তলব করেছেন জেলা জজ এ কে এম আবুল কাশেম। ওই আইনজীবী বলেন, ‘ওই ঘটনার দিন আমার একজন জুনিয়র আইনজীবীর মাধ্যমে ওফাজের পরিবর্তে জাহাঙ্গীর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আমার জুনিয়র আইনজীবী এ কাজ করেছেন, তবু এর দায়দায়িত্ব আমার ওপরই বর্তায়। বিষয়গুলো আমি বিচারককে খুলে বলেছি।’

জাহাঙ্গীর আলমের বাবা আতর আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে জাহাঙ্গীর নিখোঁজ ছিলেন। কয়েক দিন আগে জানতে পারি, সে জেলহাজতে আছে। কাল (আজ মঙ্গলবার) তাঁকে কারাগারে দেখতে যাব।’

কালিয়াকৈর উপজেলার হিজলহাটি গ্রামের মৃত কছিমউদ্দিনের ছেলে ওফাজ উদ্দিন চন্দ্রা বন বিটের বিশ্বাসপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। বনের ক্ষতিসাধন করায় তাঁর বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে বন বিভাগ একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালত দুটি পৃথক ধারায় ওফাজকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। ওফাজ উদ্দিনের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা হয়। তিনি পলাতক ছিলেন। আসামি ওফাজ দুই মাস আগে জাহাঙ্গীর আলমকে তিন লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলে তাঁর পরিবর্তে তাঁকে আদালতে হাজির হতে বলেন। পরে ২৬ জানুয়ারি আদালত জাহাঙ্গীরকে কারাগারে পাঠান। সেই থেকে তিনি কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দী।