১৪ দল অস্তিত্ব দেখাবে সমাবেশে

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার ১৪ দলের বৈঠক হয়। ফাইল ছবি
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার ১৪ দলের বৈঠক হয়। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের অস্তিত্ব কীভাবে দৃশ্যমান রাখা যায়, সেটা নিয়ে গতকালের বৈঠকে আলোচনা করেছেন এই জোটের নেতারা। এ লক্ষ্যে কিছু সভা-সমাবেশেরও কর্মসূচি ঠিক করা হয়। এ ছাড়া সরকারের কিছু ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।

গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৪ দলের এই বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষ সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, নৈরাজ্য, মাদক, নারী-শিশু নির্যাতনসহ সব অনিয়মের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এসব কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১০ এপ্রিল মতিঝিলে ও ১১ এপ্রিল ধানমন্ডিতে অভিভাবক সমাবেশ। ১৫ ও ১৬ এপ্রিল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গোলটেবিল বৈঠক। এ ছাড়া মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ১৯ এপ্রিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ হবে।

বৈঠকে সমসাময়িক কিছু বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। বৈঠকে ছিলেন এমন একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জোটের নেতারা বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ভালোভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানান। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ার পেছনে সরকারের কোনো সংস্থার গাফিলতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেন কেউ কেউ।

বৈঠকে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ১৪ দলকে দৃশ্যমান করতে হবে। এ জন্য সরকারের কাজে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি বিরোধী দলের ভূমিকাও পালন করতে হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বিরোধী দলের ভূমিকা বলতে কী, সেটা আগে স্পষ্ট হওয়ার দরকার আছে।

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আগুনে পুড়ে মানুষের মৃত্যুর বিষয়টি কি নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি অন্য কিছু, তা খতিয়ে দেখা দরকার। একই কথা বলেন কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত বরণ রায়।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা (বিল্ডিং কোড) না মানার কারণে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানি বাড়ছে। বনানীর এফ আর টাওয়ারের মালিককে গ্রেপ্তারের পর বিএনপি বলছে, রাজনৈতিক কারণে তাদের নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপি সবকিছুতে সরকারকে দায়ী করছে।

সড়কে নৈরাজ্যের জন্য দায়ী শ্রমিকনেতা, মালিক ও বিআরটিএ
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড ও সড়কে প্রাণহানির বিষয়ে বলেন, সরকার বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও অধিদপ্তরের। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রশাসনে যাঁরা থাকেন, তাঁরা ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন না। তাঁদের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অনিয়ম রাষ্ট্রব্যবস্থা ও সরকারকে ব্যর্থ করে দেয়।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সড়কে নৈরাজ্যের জন্য কিছু অর্থলোভী শ্রমিকনেতা ও মালিকপক্ষ দায়ী। এর সঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা দায়ী। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন না হওয়া পীড়া দেয়।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আবদুস সোবহান গোলাপ ও বিপ্লব বড়ুয়া, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার প্রমুখ।