সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে অবরোধ

সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী গতকাল সোমবার নগরের পোর্ট কানেকটিং সড়ক অবরোধ করেছে। এতে চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীসহ চার শতাধিক লোক অংশ নেয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে ঠিকাদারের কার্যালয় ঘেরাও করারও হুমকি দেয় ভুক্তভোগী লোকজন।

স্থানীয় লোকজন জানায়, পাঁচ–ছয় বছর ধরে পোর্ট কানেকটিং সড়কটি গাড়ি চলাচলের উপযোগিতা হারিয়েছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে জোয়ার–ভাটার পানিতে সড়কটি ডুবে থাকে। এ কারণে বছর দু–এক আগে সড়ক উঁচু করার কাজ শুরু হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালু এবং বর্ষায় সড়কে কাদামাটির কারণে চলাচল করা যায় না।

স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধীরগতিতে সংস্কারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে আশপাশের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর সড়কের দুই পাশের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা কার্যত লাটে উঠেছে। ধুলাবালুর কারণে ওই এলাকার ঘরে ঘরে শ্বাসকষ্টের রোগী বাড়ছে। তাই এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা গতকাল রাস্তায় নেমে বড়পুল–সংলগ্ন আড়ংয়ের সামনে পোর্ট কানেকটিং সড়ক অবরোধ করে। গতকাল অবরোধের স্থায়িত্ব ছিল বেলা ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গতকাল অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয় হালিশহর ক্যাম্ব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হাউজিং সেটেলমেন্ট পাবলিক স্কুল, সিলভার বেলস স্কুল ও ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থীসহ পোর্ট কানেকটিং সড়কের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। তাঁরা সড়ক অবরোধ করলে গাড়ি চলাচলও বন্ধ থাকে। গতকালের অবরোধ কর্মসূচি থেকে ঠিকাদারের সাইট অফিস ঘেরাও করার হুমকি দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচির আয়োজক হালিশহর সমাজকল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, পোর্ট কানেকটিং সড়কের অচলাবস্থার কারণে পাঁচ–ছয় বছর ধরে হালিশহরের বাসিন্দারা জিম্মি হয়ে আছে। বছর দু–এক আগে সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধীরগতিতে কাজ করছে। এ কারণে ধুলাবালুর জন্য ঘরে টেকা যাচ্ছে না।

রকিবুল আরও বলেন, ধুলাবালুর কারণে প্রতিটি ঘরে শ্বাসকষ্টের রোগী পাওয়া যাবে। আসলে অদক্ষ ও অযোগ্য ঠিকাদার দিয়ে কাজ করানোর কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এ জন্য এলাকাবাসী রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ না হলে ঠিকাদারের সাইট অফিস ঘেরাও করা হবে।

সময়ের তুলনায় পোর্ট কানেকটিং সড়কের সংস্কারকাজের অগ্রগতি কম হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রানা বিল্ডার্স লিমিটেড-সালেহ আহমেদকে (জেভি) ব্যাখ্যা দিতে বলেছিল সিটি করপোরেশন। গত ৭ মার্চ দেওয়া নোটিশে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজের অগ্রগতি করতে ব্যর্থ হয়েছে। যথাযথ অগ্রগতি না হওয়ায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে গতকাল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, মে মাসের মধ্যে পোর্ট কানেকটিং সড়কের সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি কার্পেটিং করে গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এতে ধুলাবালুর সমস্যা কেটে যাবে। তবে সড়কের সৌন্দর্যবর্ধন এবং বাতির কাজ ধীরে ধীরে চলবে।