তারাগঞ্জে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ তিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী উচ্চবিদ্যালয় ও ডাংগীরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গরু-ছাগল জবাই করায় দুর্গন্ধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ। একইভাবে ডারারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থাকা মুরগির খামার থাকায় বিষ্ঠার দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে টিকতে পারছে না। এতে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ওই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ১২০ জন শিক্ষার্থী আছে। হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের ডাংগীরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে ডাংগীরহাট হাট এবং ইকরচালী ইউনিয়নের ইকরচালী উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে ইকরচালী হাট গড়ে উঠেছে। ওই দুই হাটে পশু জবাইয়ের নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় বিদ্যালয়ের পাশে ভোরে গরু-ছাগল জবাই করা হচ্ছে। সয়ার ইউনিয়নের ডারারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মিলন রহমান নামের এক ব্যক্তি মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন।

তারাগঞ্জ-বুড়িরহাট সড়কের পাশে ১৯৭৭ সালে ডারারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিদ্যালয়টিতে ২৪৮ জন শিক্ষার্থী ও ৪ জন শিক্ষক আছে। গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের সামনে ৭০ গজ দূরে দক্ষিণ দিকে একটি মুরগির খামার গড়ে তোলা হয়েছে। খামারে তিন হাজার মুরগি পালন করা হচ্ছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে পথচারীরা নাক-মুখ চেপে বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে চলাচল করছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কক্ষের দরজা বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন।

এই বিষয়ে মুরগির খামারের মালিক মিলন রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি কাউকে বোঝাতে পারতেছি না যে আমাদের দান করা জমিটাতেই ওই বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। আর আমি তো নিজের জমিতে মুরগির খামার গড়ে তুলেছি। এতে সমস্যা কী? অন্যের জন্য তো মুরগীর খামার বন্ধ করে দিয়ে পথে বসতে পারি না।’

উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ইকরচালী উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে ইকরচালী হাটটি গড়ে উঠেছে। এখানে রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার হাট বসে। প্রতি হাটের দিন ভোরে আট-নয়টি পশু জবাই করা হয়।

উপজেলা সদর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে ডাংগীরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ডাংগীরহাট হাট। প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও মঙ্গলবার এখানে হাট বসে। ২০ বছর আগে এই হাটে মাংস বিক্রির জন্য একটি শেড নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পশু জবাইয়ের নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় যেখানে–সেখানে পশু জবাই করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। এখন জানলাম। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।