রাজনীতি ছাড়লেন নগর বিএনপি নেতা মোতালেব

আবু মোতালেব
আবু মোতালেব

মামলার চাপ ও পুলিশি হয়রানির মুখে রাজনীতি ছাড়লেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা বিএনপির সহসভাপতি আবু মোতালেব। দলের মহাসচিবের কাছে দেওয়া লিখিত অব্যাহতিপত্রে তিনি বলেছেন, তাঁর ‘স্ত্রী-সন্তানেরা পুলিশি চাপে ও ভয়ভীতির কারণে আতঙ্কগ্রস্ত।’ তিনি নিজেও ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ’ হয়ে পড়েছেন। তাই রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আবু মোতালেব গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বিএনপির রাজনীতি ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘১৯৮৩ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। এখন অবসরে যাওয়ার সময় হয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গত ২৮ মার্চ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবর একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন আবু মোতালেব। তাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি ও চকবাজার থানার সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তিনি।

অব্যাহতি প্রসঙ্গে লিখিত আবেদনপত্রে আবু মোতালেব উল্লেখ করেছেন, কমিটি গঠনের পর তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব তিনি যথাযথভাবে পালন করেছেন। গত দুই বছরে তাঁর বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা ও হয়রানি করা হয়েছে। পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রতিও রাজনৈতিক ও পুলিশি চাপ রয়েছে। সে কারণে স্ত্রী, সন্তানেরা ভীত ও আতঙ্কগ্রস্ত রয়েছেন। এমন অবস্থায় তিনি নিজেও মানসিক ও শারীরিকভাবে দুই মাস ধরে অসুস্থ। ওই আবেদনপত্রে তিনি অভিযোগ করেন, ব্যক্তিগত এই বিপদের সময়ে দলীয় আইনজীবী থেকে শুরু করে কারও কাছ থেকেই কোনো সহযোগিতা পাননি। এমন পরিস্থিতিতে দলীয় পদের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার পাশাপাশি বিগত সময়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনেরও (এফবিসিসিআই) আটবার পরিচালক ছিলেন আবু মোতালেব। আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে তিনি পরিচালক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে।

এই নেতার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন আবু মোতালেব। মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার আগে প্রতি আসনে প্রাথমিকভাবে একাধিক ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও ওই তালিকায় আবু মোতালেবকে রাখা হয়নি। দলের এমন আচরণে তিনি মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। এমন বাস্তবতায় রাজনীতি ছেড়ে দেওয়াই তিনি যৌক্তিক মনে করেছেন।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাসার বলেন, বিরোধী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তির পরিবার-নিকটাত্মীয় কেউ নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। অনেকে বাধ্য হয়ে রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছেন।

এর আগে গত ২৮ মার্চ কোতোয়ালি থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সাইফুলও দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে লিখিত আবেদন করেছিলেন।