বাঘাইছড়ি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সঙ্গে গোলাগুলি, নিহত ১

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে মিয়ানমারের সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকায় আজ বুধবার বেলা ১১টায় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনী ও র‍্যাবের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জ্ঞান শংকর চাকমা নামের এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, নিহত জ্ঞান শংকর চাকমা রাঙামাটির চাঞ্চল্যকর সাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তি। 

ঘটনার পর সন্ত্রাসীদের ধরতে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে যৌথ অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। লেম্বুছড়ি এলাকাটি পড়েছে উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির পকেটে একটি আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। তাতে নাম লেখা আছে জ্ঞান শংকর চাকমা (৩৯)। পিতা হামিস কুমার চাকমা। বাড়ি রাঙামাটি পৌরসভার জেল রোড এলাকায়। গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বুকে ও পিঠে একাধিক গুলির দাগ আছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। র‍্যাব মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পুলিশ ও র‍্যাব সূত্র জানায়, জ্ঞান শংকর চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি সশস্ত্র সংগঠনের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। গত ১৮ মার্চ রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট লোকজনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। হামলায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ সাতজন প্রাণ হারান এবং গুরুতর আহত হন আরও ১৯ জন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন ছিলেন নিহত জ্ঞান শংকর চাকমা।
র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতা উদ্দিন আহমেদ বলেন, সন্ত্রাসীদের একটি দল আজ সকালে লেম্বুছড়ি এলাকায় সেনা টহলের তাড়া খেয়ে পালানোর সময় র‍্যাবের পাতা ফাঁদে প্রবেশ করে এবং ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলির মুখে টিকতে না পেরে সন্ত্রাসীরা একপর্যায়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে গহিন জঙ্গলে পালিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে একটি মৃতদেহ পাওয়া যায়।
র‍্যাব জানায়, এ সময় মৃতদেহের পাশ থেকে ৭টি এসএমজি, ১১টি ম্যাগাজিন, ৪৩৭টি গুলি, ১১টি খালি খোসা ও ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। মৃত ব্যক্তির পকেটে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে জানা যায় তাঁর নাম জ্ঞান শংকর চাকমা। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি রাঙামাটির বাঘাইছড়ির হামলায় অংশগ্রহণকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে আরও নাশকতা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ জন্য তারা অত্যাধুনিক অস্ত্র কিনে আবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আনছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী গতকাল বুধবার নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ির বিভিন্ন স্থানে ফাঁদ পাতে।