প্রভাষক নেই, তবে তোলা হচ্ছে বেতন

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মিয়াজানপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুজন ভুয়া প্রভাষকের নামে বেতন-ভাতা তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে ওই মাদ্রাসার দুজন সহকারী শিক্ষক ক্লাস না করিয়ে বেতন-ভাতা তুলছেন।

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জিয়াউদ্দিন মিলন গতকাল বুধবার সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন।

ইউএনও বলেন, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মিয়াজানপুর ফাজিল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর থাকলেও অধ্যক্ষসহ পাঁচজন অনুপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে রয়েছেন প্রভাষক মো. আলী শেখ। এই নামে ওই মাদ্রাসায় কোনো প্রভাষক নেই। মিজানুর রহমান নামের দুজন প্রভাষক আছেন। আরবি ও গণিতের প্রভাষক। গণিতের প্রভাষক মিজানুর রহমানকে মাদ্রাসায় পাওয়া যায়। কিন্তু আরবি শিক্ষক মিজানুর রহমানকে মাদ্রাসার কেউ চেনেন না।

ইউএনও বলেন, আলী শেখ ও মিজানুর রহমান নামের দুই ভুয়া শিক্ষক নিয়োগের কাগজপত্র তৈরি করে অধ্যক্ষ টাকা তুলছেন। ধারণা করা হচ্ছে, চার-পাঁচ বছর ধরে অধ্যক্ষ এ কাজ করছেন। ওই মাদ্রাসার আরও দুই সহকারী শিক্ষক রেহানা বেগম ও হেমায়েত উদ্দিন নিয়োগের পর মাদ্রাসায় আসেননি। বুধবারও অনুপস্থিত ছিলেন। অনুপস্থিত থেকে তাঁরা বেতন-ভাতা তুলছেন।

ইউএনও আরও বলেন, তিনি অভিযোগ পেয়ে গতকাল মাদ্রাসায় যান। মাদ্রাসায় গিয়ে নথিপত্র ঘেঁটে, ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে তিনি অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হয়েছেন। তবে এ বিষয়ে আরও তদন্ত হবে। তিনি ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কাশেম বলেন, প্রভাষক মো. মিজানুর রহমান ও মো. আলী শেখ দুজন প্রভাষক। তাঁদের বেতন তাঁরাই তুলেছেন। তিনি তোলেননি। তবে তাঁরা মাদ্রাসায় অনুপস্থিত ছিলেন। আর রেহানা বেগম ও হেমায়েত উদ্দিন প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন সত্য, তবে নিয়মিত নয়।

এ বিষয়ে রেহানা বেগম ও হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

মিয়াজানপুর মাদ্রাসার সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর সভাপতি হয়েছেন। তিনি কখনো মাদ্রাসায় যাননি। অধ্যক্ষ বিলের কাগজপত্র নিয়ে এলে স্বাক্ষর দিতেন। কে ভুয়া, কে অনুপস্থিত, সেটি তিনি জানতেন না। তবে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের বিলে স্বাক্ষর করতে গিয়ে মিজানুর রহমান নামের এক প্রভাষকের বিষয়ে তাঁর সন্দেহ হয়। তখন তিনি ওই বিল আটকে দেন।