সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার চড়াপাড়া-বারবাকিয়া বাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কারকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী। গতকাল দুপুরে এতিমখানা এলাকায়। প্রথম আলো
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার চড়াপাড়া-বারবাকিয়া বাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কারকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী। গতকাল দুপুরে এতিমখানা এলাকায়। প্রথম আলো

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার চড়াপাড়া থেকে বারবাকিয়া বাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কারকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিম্নমানের বালু, কংকর ও বিটুমিন ব্যবহার করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাঁদের অভিযোগ করার পরও কোনো কাজ হচ্ছে না।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের পেকুয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, চড়াপাড়া থেকে বারবাকিয়া বাজার পর্যন্ত অন্তত পাঁচ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার, বারবাকিয়া বাজারে আড়াই শ মিটার আরসিসি ঢালাই, কসাইপাড়া এলাকায় ২৫ মিটার আরসিসি ঢালাই, এতিমখানা এলাকায় ২৫ মিটার ড্রেন নির্মাণ ও দুটি ছোট কালভার্ট নির্মাণ করতে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চকরিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আসিফ এন্টারপ্রাইজ।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, শিলখালী ইউনিয়নের এতিমখানা এলাকায় সড়ক সংস্কারকাজে ব্যবহারের জন্য নিম্নমানের ইট এনে খোয়া বানানো হচ্ছে। শিলখালী উচ্চবিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে পৃথকভাবে প্রায় এক শ মিটার সড়ক যেনতেনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। কম পরিমাণ উপাদান ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তড়িঘড়ি করে সড়কের এ অংশের সংস্কারকাজ শেষ করা হয়েছে। এ ছাড়া সংস্কারকাজের জন্য চড়াপাড়া এলাকায় এনে মজুত করা হয়েছে নিম্নমানের পাথর, বালি ও বিটুমিন। বিটুমিন ব্যবহারের আগে ময়লা ও শুকনো পাতা পরিষ্কার না করেই প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। এতে পিচঢালাই অনেক স্থানে উঠে যাচ্ছে।

কাছারীমোড়া স্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হোছাইন বলেন, চড়াপাড়া-বারবাকিয়া বাজার সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কারবঞ্চিত ছিল। এখন সংস্কারকাজ হচ্ছে। কিন্তু চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে যেনতেনভাবে সংস্কারকাজ শেষ করার চেষ্টা করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগাদা দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

শিলখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, নিম্নমানের সংস্কারকাজ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। নিম্নমানের খোয়া ও বিটুমিন ব্যবহারের কারণে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের কাজে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগসাজশ রয়েছে।

জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. পারভেজ বলেন, ‘সড়কের কাজে এদিক-ওদিক হয়। কিছু ইটে সমস্যা ছিল, তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমি নিজে সংস্কারকাজ তদারকি করছি। এখন নিম্নমানের কাজ হচ্ছে না বলে দাবি করে তিনি।’

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর, পেকুয়া উপজেলার প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহেদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমি পরিদর্শনে গিয়ে সংস্কারকাজে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহারের সত্যতা পেয়েছি। এ ব্যাপারে ঠিকাদারকে সতর্ক করা হয়েছে। সংস্কারকাজে আমাদের নিয়মিত নজরদারি রয়েছে। এরপরও কোনো অনিয়ম করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’