বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার বাজারে ঢুকতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য, জানালেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন (ফাইল ছবি)
ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন (ফাইল ছবি)

দেশের উচ্চশিক্ষার বাজারে যুক্তরাজ্য ঢুকতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সরকারকে বলেছি উচ্চশিক্ষার বাজার খুলে দিতে, যাতে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশে পরিচালনা করা যায় এবং তরুণ বাংলাদেশিরা বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা দেশেই পেয়ে উপকৃত হতে পারেন।’

রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক সিম্পোজিয়ামে আজ বৃহস্পতিবার সকালে এসব কথা বলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার। ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক: ভবিষ্যতের জন্য পূর্বাভাস’ শীর্ষক এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেছে কসমস ফাউন্ডেশন।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, ‘এটা হলে বাংলাদেশের মানবসম্পদের জন্য একটা বড় অবদান হবে। সরকার ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে আমরা যোগাযোগ রাখছি।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সংস্কৃতিগত এবং নিরাপত্তাবিষয়ক সম্পর্কের পরিস্থিতি তুলে ধরেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে যেতে প্রস্তুত হওয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের প্রতি আরও মনোযোগ বাড়বে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ব্রেক্সিট–পরবর্তী ব্রিটেনের সঙ্গে বাংলাদেশের পারস্পরিক সমঝোতা দুই দেশের বাণিজ্যের জন্য উপকার বয়ে আনবে।

স্বাগত বক্তব্যে কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান বলেন, ব্রিটেন, বেঙ্গল এবং এখনকার বাংলাদেশের মধ্যে যে আবেগপ্রবণ সম্পর্ক, তা খুব কম দেশের আছে। ক্রিকেট, সংস্কৃতি, ভাষা ও সাহিত্য, দূরদৃষ্টি এবং মূল্যবোধেরও মিল আছে, যার জন্য এই দুই দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গাঢ়। ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে যা–ই হোক না কেন, বাংলাদেশ ও ব্রিটেন এবং এই দুই দেশের নাগরিকেরা তাদের সম্পর্ক বজায় রাখবে।

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, ‘আমি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছিলাম গত সপ্তাহে। সেখানে দেখেছি রোহিঙ্গাদের তাৎক্ষণিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে অসাধারণ অংশীদারত্বের অবদান। আবার এই সপ্তাহে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে গিয়ে আমি ভিন্ন আরেকটি অংশীদারত্ব দেখেছি। সেখানে যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে এনজিও ব্র্যাক দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ করছে। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বাংলাদেশের অন্য জনগোষ্ঠীর জন্যও কাজ করছে।’

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতিগত ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক গভীর ও প্রশস্ত। বাণিজ্যিক সম্পর্কের ফলে বাংলাদেশ প্রচুর কর পাচ্ছে। আবার এসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতির সংযোগ তৈরি করছে। দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তার সম্পর্কও তৈরি হয়েছে। দুই দেশের মাঝে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ হচ্ছে। বাংলাদেশের যে দক্ষতা আছে জাতিসংঘ মিশনে শান্তি রক্ষায় তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া এই দুই দেশই মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে পরস্পর সহযোগী হয়ে অনেক কাজ করছে।

দুই দেশই জঙ্গিবাদ ও অস্থিরতার হুমকি সামলাতে কাজ করছে উল্লেখ করে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, ‘এর অংশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশকে মানবাধিকার, জনগণের একতা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সহায়তা করতে চাই।’