যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূর চুল কেটে নির্যাতনের অভিযোগ

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের অলংকারপুর টেংরাপাড়া গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ধারালো বঁটি দিয়ে ওই গৃহবধূর চুল কেটে ঘরে আটকে রেখেছিলেন তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি।

পুলিশ আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে এবং তাঁর স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করেছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম চুমকি বেগম (২৫)। তিনি অলংকারপুর গ্রামের ওয়াজেদ প্রামাণিকের ছেলে রিয়াজ প্রামাণিকের স্ত্রী। ওই দম্পতির দুই বছরের একটি মেয়ে আছে।

নির্যাতনের শিকার চুমকি বেগম অভিযোগ করে বলেন, রিয়াজের সঙ্গে ২০১৩ সালে তাঁর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই রিয়াজ বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন। মেয়ের সুখের কথা ভেবে চুমকির বাবা বিয়ের কিছুদিন পর ৫০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু রিয়াজ মাঝেমধ্যে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। টাকা না দিলে চলত শারীরিক নির্যাতন। মারধর করে চুমকিকে কয়েকবার তাঁর বাবার বাড়িতে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে চুমকির পরিবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছিল। পরে উভয় পক্ষের সম্মতিতে স্বামীর পরিবারের লোকজন মুচলেকা দিয়ে চুমকিকে ফিরিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুমকির কাছে আবারও টাকা চাওয়া হয়। টাকা দিতে না চাইলে ওই দিন রাতে রিয়াজ তাঁকে মারধর করেন। এ সময় শাশুড়ি মরিয়ম বেগম চুমকির হাত ধরে রাখেন এবং স্বামী রিয়াজ প্রামাণিক বঁটি দিয়ে চুল কেটে দেন। পরে তাঁকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। সুযোগ বুঝে এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে বাবাকে খবর দেন চুমকি। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

চুমকি বেগম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী বিয়ের পর থেকে প্রতিনিয়ত টাকা চাইতেন। তাঁকে মারধর করতেন। সব ঠিকঠাক হয়ে যাওয়ার আশায় তিনি কাউকে কিছু বলেননি। কিন্তু এবার মাথার চুল কেটে দেওয়ায় তিনি মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছেন। এ কারণে বাবাকে ফোন করে সবকিছু খুলে বলেছেন।

বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, নির্যাতনের ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে এবং অভিযুক্ত স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।