খাগড়াছড়িতে বৈসাবির কেনাকাটা জমজমাট

বৈসাবির কেনাকাটায় ব্যস্ত এক তরুণী। গতকাল সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার একটি বিপণিকেন্দ্রে।  প্রথম আলো
বৈসাবির কেনাকাটায় ব্যস্ত এক তরুণী। গতকাল সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার একটি বিপণিকেন্দ্রে। প্রথম আলো

হাতে সময় কম। কদিন পরেই পাহাড়িদের বৈসাবি উৎসব। এর মধ্যে খুঁজে নিতে হবে পছন্দের পোশাকটি। ক্রেতারাও অনেকটা আদাজল খেয়ে নেমেছেন। অনেকে আবার মনের মতো পোশাক বানাতে ছুটছেন দরজিবাড়ি। সেখানেও শেষ মুহূর্তে ব্যস্ততা।

গতকাল শনিবার খাগড়াছড়ি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তৈরি পোশাক মাঝবয়সী নারীদের পছন্দের তালিকায় থাকলেও থান কাপড়ের দোকানে তরুণীদের ভিড় বেশি। সেলাই করা থ্রিপিস পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। সেলাইবিহীন সুতি থ্রিপিসের দাম ৪৫০ থেকে ৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া জমকালো কাজ করা দেশি-বিদেশি থ্রিপিসের দাম ২ হাজার টাকার ওপরে। বৈসাবির কেনাকাটার বাজারে সুতি, লিনেন, সিল্ক, জর্জেট, কাতান ও নেট কাপড়ের বিক্রিও ভালো বলে জানালেন দোকানিরা। এসব কাপড় প্রতি গজ ৬০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে কথা হয় পানছড়ি থেকে আসা আনুচিং মারমা, ডলিপ্রু মারমা, আথুইশি মারমাসহ একদল তরুণীর সঙ্গে। তাঁরা জানান, ১১ জন বান্ধবি মিলে এবারের সাংগ্রাই উৎসবে একই ডিজাইনের নেটের গজ কাপড়ের থামি সেলাই করবেন। তিন ঘণ্টা সারা বাজার ঘুরে তাঁরা পছন্দের কাপড় কিনেছেন। তবে শেষ মুহূর্তে এসে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে তাঁদের সেলাইয়ের দামও দিতে হবে বেশি।

শহরের খাগড়াপুর এলাকার ফেমি টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী বীণা ত্রিপুরা জানান, ‘৩১ মার্চ থেকে অর্ডার (ফরমাশ) নেওয়া বাদ দিয়েছি। সকাল থেকে রাত অবধি দোকানের চারজন কর্মী মিলে সেলাই করছেন। সেলাইয়ের ধরন ও সময় বুঝে নিচ্ছেন বাড়তি দামও।’

দীঘিনালার বড়াদাম এলাকার শিক্ষিকা রিনা চাকমা বলেন, কাপড় পছন্দ হচ্ছে তবে দাম বেশি। পনেরো দিন আগেও কাপড়ের এমন দাম ছিল না।

খাগড়াছড়ি বাজারের শাড়ি, থ্রিপিস ও থান কাপড়ের দোকান আমন্ত্রণ ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. শাহআলম বলেন, ‘পরিস্থিতির কারণে ভেবেছিলাম বেচা-বিক্রি হবে না, সে জন্য মালামালও তেমন নিয়ে আসেনি। তবে গত চার-পাঁচ দিন লোকজন আসা শুরু করেছে। থ্রিপিসের চেয়ে থান কাপড় বিক্রি হচ্ছে বেশি। শাড়িও বিক্রি হচ্ছে মোটামুটি। শুধু পাহাড়িরা কেনাকাটা করছেন তা না। পাহাড়ের বসবাসরত বাঙালিরাও কেনাকাটা করতে ভিড় করছেন বাজারগুলোতে।’

শহরের কল্যাণপুর এলাকার নাসিমা আক্তার নামে এক গৃহবধূ এসেছেন তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বৈসাবির কেনাকাটা করতে। তিনি জানান, প্রতিবেশীরা পাহাড়ি তাদের দেখাদেখি সন্তানেরা আবদার করেন নতুন পোশাকের জন্য। তাই তিনি প্রতিবছর সবার জন্য বৈসাবি উপলক্ষে নতুন পোশাক কেনেন।