খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে জোড়াতালির পাঠদান

শিক্ষক ও কর্মচারীর সংকটে বোয়ালমারী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ১১টি পদের মধ্যে শিক্ষক রয়েছেন পাঁচজন। খণ্ডকালীন শিক্ষকদের মাধ্যমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে পাঠদান। ফলে বিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালমারী পৌর এলাকায় দক্ষিণ শিবপুর মহল্লায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পূর্ব পাশে বিদ্যালয়। ১৯৬৫ সালে দেড় একর জমির ওপর বোয়ালমারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় নামে যাত্রা শুরু করে। ১৯৮৭ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অনুমোদিত ১১টি পদ রয়েছে। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ ৬টি পদই শূন্য। গত ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী ছিল ৭২৩ জন। এ বছর ৫১ জন কমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৭২। এর মধ্যে বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে ছাত্রীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বেশি। নবম ও দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে ছাত্রীর সংখ্যা যথাক্রমে ৬০ ও ৩০।

সহকারী প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হাসান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। বিজ্ঞান, শরীরচর্চা ও বাণিজ্য বিভাগে মাত্র একজন করে শিক্ষক আছেন। কম্পিউটার শিক্ষা ও চারুকারু বিষয়ে শিক্ষকের কোনো পদ নেই, শিক্ষকও নেই। কৃষিশিক্ষা বিষয়ের শিক্ষকের পদ থাকলেও নেই শিক্ষক। বর্তমানে ১২ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক আছেন। খণ্ডকালীন শিক্ষকেরাই শ্রেণিশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া অফিস সহকারী ও নৈশপ্রহরীর পদ শূন্য রয়েছে।

এক ছাত্রীর অভিভাবক নূর মোহাম্মদ বলেন, তাঁর মেয়ে এই বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ছে। শিক্ষকসংকটের কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি কোনো শিক্ষক শ্রেণিশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন না। খণ্ডকালীন শিক্ষকেরাই শ্রেণিশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বোয়ালমারী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানোয়ার চৌধুরী বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর ছাত্রীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। শূন্য পদসহ নতুন পদ সৃষ্টি করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান তিনি।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হাসান বলেন, শিক্ষকসংকটের কারণে খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে। বিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অসুস্থ হওয়ায় ক্লাস নিতে পারছেন না। অপর দুই নিয়মিত শিক্ষক ঠিকমতো ক্লাসে যেতে চান না। এ কারণে বিদ্যালয় চালু রাখা ও পাঠদান অব্যাহত রাখার জন্য খণ্ডকালীন শিক্ষকদের শ্রেণিশিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ছাত্রীদের সেশন চার্জ, পরীক্ষার ফি দিয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রহিম বলেন, সরকারি স্কুলে তাঁদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগের নীতিমালা না থাকলেও একটা নিয়মের মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিক্ষক নিয়োগ করা উচিত। সরকারি শিক্ষকদেরই শ্রেণিশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করা উচিত।