যশোর রোডের গাছের শিকড় কাটা পড়ছে

যশোর-বেনাপোল সড়কের উন্নয়ন ও গাছ রক্ষার দাবি নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ঢাকা, ৮ এপ্রিল। ছবি: হাসান রাজা
যশোর-বেনাপোল সড়কের উন্নয়ন ও গাছ রক্ষার দাবি নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ঢাকা, ৮ এপ্রিল। ছবি: হাসান রাজা

যশোর রোডের বাংলাদেশ অংশে শতবর্ষী গাছগুলোর শিকড় কেটে রাস্তা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বিশিষ্ট নাগরিকেরা। তাঁরা বলেছেন, সড়ক সম্প্রসারণের নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিছু গাছের শিকড় ইচ্ছাকৃতভাবে কেটে দিচ্ছে। এতে ভালো গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

আজ সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর–রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা। বাপা ও যশোর রোড উন্নয়ন ও গাছ রক্ষা সমন্বয় কমিটি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য অংশ এই যশোর–বেনাপোল সড়ক। শুধু ওই রাস্তার ওই সময়কার ছবিগুলো দেখলেই মানুষ বুঝতে পারবে, মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, শরণার্থীদের দুর্দশা। গাছগুলোর নিচে শত শত মানুষ মারা গেছে, শত শত শিশুর জন্ম হয়েছে সেখানে। গাছগুলো যে অবস্থায় আছে, তাতে রক্ষা করা যায়।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যশোর রোড উন্নয়ন ও গাছ রক্ষা সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও স্থানীয় বাসিন্দা খন্দকার আজিজুল হক। তিনি বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত এবং আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে যশোর–বেনাপোল সড়কে শতবর্ষী গাছগুলো ‘সুকৌশলে’ নিধন করা হচ্ছে। রাস্তা সম্প্রসারণে কর্মরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি অপসারণের সময় কিছু ভালো গাছের তলার দিকে দুই ধারে শিকড় কেটে ফেলছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো আরও ঝুঁকিতে এবং ভালো গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের উদাসীনতা জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নের তৈরি হয়েছে।

খন্দকার আজিজুল হক আরও বলেন, ‘এই যশোর রোড আমাদের গৌরবময় ইতিহাসের অংশ। লাখ লাখ বাস্তুহারা মানুষ এই রোড ধরে আশ্রয়ের সন্ধানে ভারতে গিয়েছিল। এই রাস্তা ধরেই প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার এসে মুক্ত যশোরে প্রথম জনসভা করেছিল। আমাদের উন্নয়ন হতে হবে সুদূরপ্রসারী, পরিবেশ ও প্রতিবেশবান্ধব। যশোর রোডের গাছ সেই প্রতিবেশেরই অংশ। এর যথাযথ সংরক্ষণ চাই।’

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আমিরুল আলম খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।