দেহরক্ষী নিলেন না শামীম ওসমান

শামীম ওসমান। ফাইল ছবি
শামীম ওসমান। ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাংসদ শামীম ওসমানের জন্য নতুন দেহরক্ষী দিলেও তিনি সেই সুবিধা নেননি বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ। চাকরিবিধি লঙ্ঘন করায় তাঁর আগের দেহরক্ষী কনস্টেবল মামুন ফকিরকে বদলি করা হয়। পরে তাঁর জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নতুন দেহরক্ষী নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত ২৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনসে কর্মরত কনস্টেবল মো. মাহমুদুর রহমানকে সাংসদের দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। কিন্তু গত ১০ দিনেও নতুন দেহরক্ষী নেননি সাংসদ শামীম ওসমান। এদিকে তিনি দেহরক্ষী না নেওয়ায় তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত পুলিশ প্রশাসন।

জেলা পুলিশ লাইনসের রিজার্ভ অফিসের পরিদর্শক হাসমত আলী বলেন, সাংসদ শামীম ওসমানের জন্য দেহরক্ষী হিসেবে কনস্টেবল মাহমুদুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে কনস্টেবল মাহমুদুর এখনো যোগদান করেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সাংসদ কনস্টেবল মাহমুদুরকে না নেওয়ায় এখনো তিনি যোগদান করতে পারেননি। শামীম ওসমান বিভিন্ন সময় বলেছেন যে তিনি যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তার ওপর যেকোনো সময় হামলা হতে পারে। তাই সাংসদের উচিত দ্রুত তাঁর দেহরক্ষী নেওয়া।

২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সভাপতিত্বে সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে সংসদ সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিরাপত্তায় গানম্যান দেওয়া যাবে। সংসদ সদস্যরা শুধু সংসদীয় এলাকায় দেহরক্ষীর নিরাপত্তা পাবেন। সাংসদ নির্বাচনী এলাকার বাইরে চলে গেলে নিরাপত্তায় নিয়োজিত দেহরক্ষী নিজ নিজ ইউনিটে রিপোর্ট করবেন। এই নিরাপত্তা শুধু সাংসদরাই পাবেন। তাদের স্ত্রী, সন্তান বা পরিবারের কেউ পাবেন না। সাংসদ শামীম ওসমানের জন্য দেহরক্ষী হিসেবে ২০১৩ সাল থেকে কনস্টেবল মামুন ফকির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু কনস্টেবল মামুন ফকির চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে সাংসদ শামীম ওসমানের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন না করে গত ১৪ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সাংসদের ছেলে অয়ন ওসমানের সঙ্গে কক্সবাজারে অবস্থান করেন। যা তাঁর চাকরিবিধির পরিপন্থী। ওই সময় সাংসদ শামীম ওসমান দেহরক্ষী ছাড়া নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করেন।

এ ঘটনা তদন্তে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুবাস চন্দ্র সাহাকে ঘটনা অনুসন্ধান করে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তদন্তে মামুন ফকিরের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন তাঁকে কিশোরগঞ্জ বদলির আদেশ দেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলবে বলেও নির্দেশ দেন।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সাংসদ শামীম ওসমানের নিরাপত্তায় একজন কনস্টেবলকে দেহরক্ষী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি দেহরক্ষী ওই কনস্টেবলকে নেননি।