তিন পদে ডাকা হয়েছে তিনজনকে

সহযোগী অধ্যাপকের পদ তিনটি। আবেদন করেন ১৪ জন প্রার্থী। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় তিনটি পদের বিপরীতে মাত্র তিনজনকে ডাকা হয়েছে। এ চিত্র নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের। আজ মঙ্গলবার শিক্ষক নিয়োগে বোর্ড বসার কথা।

বিভাগের শিক্ষকদের অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগে বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা করা হয়নি। এর মধ্য দিয়ে আইনের গুরুতর লঙ্ঘন করা হয়েছে। বিভাগের চেয়ারম্যান একক সিদ্ধান্তে প্রার্থী বাছাই করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংসদে পাস হওয়া নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, কোনো নতুন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির মতামত নেওয়া হয় এবং তাদের মতামতের আলোকে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে যেসব পদে যতটা আবেদন জমা পড়ে, ওই আবেদনগুলো রেজিস্ট্রার শাখা থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির কাছে পাঠানো হয়। ওই কমিটি আবেদনের খুঁটিনাটি যাচাই-বাছাই করে যোগ্য প্রার্থীর তালিকা করে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্থাপন শাখায় পাঠায়। সেখান থেকে যোগ্য প্রার্থীদের কাছে মৌখিক বা লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের চিঠি পাঠানো হয়।

কৃষি বিভাগের শিক্ষকদের অভিযোগ, সম্প্রতি তাঁদের বিভাগের জন্য তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, তিনজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষক পদে নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির কোনো ধরনের মতামত নেওয়া হয়নি। বিভাগের চেয়ারম্যান গাজী মো. মহসিন একক সিদ্ধান্তে শিক্ষক নিয়োগের যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ, সহযোগী অধ্যাপক পদে ১৪ জন প্রার্থী আবেদন করলেও তিনটি পদের বিপরীতে মাত্র তিনজনকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষক নিয়োগে গুরুতর অনিয়মের আশঙ্কা করছেন শিক্ষকেরা। উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান জাপান থেকে আজ মঙ্গলবার নিয়োগ বোর্ড বসানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। গতকাল সোমবারের মধ্যে তাঁর দেশে ফেরার কথা। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা হওয়ার কথা।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সকালে বিভাগের একাডেমিক কমিটির ৪৫তম সভা আহ্বান করা হয়। সভায় আজ সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক পদে আহ্বান করা বাছাই বোর্ড স্থগিত রাখার দাবি জানিয়ে একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের একটি কপি উপাচার্য বরাবরে দেওয়া হয়।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগেও একইভাবে পরিকল্পনা কমিটির মতামত না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বেশ কিছু শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে, যাঁরা শ্রেণিকক্ষে পাঠদানেও খুব পারদর্শী নন বলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা আছে।

শিক্ষকদের অভিযোগের বিষয়ে কৃষি বিভাগের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি গাজী মো. মহসিন প্রথম আলোকে বলেন, সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগে জুনিয়র শিক্ষক দিয়ে প্ল্যানিং কমিটি করার সুযোগ নেই। তাই তিনিই নিয়ম অনুযায়ী সব আবেদন যাচাই-বাছাই করে ১৪ জনের মধ্য থেকে তিনজনকে নির্বাচন করেছেন। এই তিনজনের মধ্যেও কেউ অযোগ্য বিবেচিত হলে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হবে না।’

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. মমিনুল হক প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষক নিয়োগে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান আবেদন যাচাই-বাছাই করে যাঁদের নামের তালিকা পাঠান, সেই তালিকা অনুযায়ী নিয়োগ বোর্ডে প্রার্থীদের ডাকা হয়। এ ক্ষেত্রে সব দায়দায়িত্ব বিভাগের চেয়ারম্যানের।