পাঠক প্রতিক্রিয়া: ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে নানা মত

সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের কবলে থাকা রাজধানীগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। সম্প্রতি তোলা। ছবি: দীপু মালাকার
সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের কবলে থাকা রাজধানীগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। সম্প্রতি তোলা। ছবি: দীপু মালাকার

সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের কবলে থাকা রাজধানীগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান এয়ারভিজ্যুয়ালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এ ছাড়া বায়ুদূষণের শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা শহরের অবস্থান ১৭তম। প্রথম আলোর পাঠকদের কাছে বায়ুদূষণ রোধে করণীয় বিষয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। অনেক পাঠক সেখানে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন।

বেশির ভাগ পাঠক রাজধানীর বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে মতামত দিয়েছেন। গাছ লাগানোর কথা বলেছেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পাঠক। এ ছাড়া শিল্পকারখানায় নজরদারি ও দূষণকারী বিভিন্ন উপাদানের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কথা বলেছেন তাঁরা।

আবদুল্লাহ আল মুজাহিদ লিখেছেন, ‘রাজধানী বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই ঢাকার বাইরে স্থানান্তর করা উচিত। ট্যানারি, কেমিক্যাল ব্যবসা, দাহ্য পদার্থ বায়ুদূষণ করে। এগুলো স্থানান্তরের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’ মো. রিজওয়ার চৌধুরী লিখেছেন, ‘বৃক্ষরোপণ বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। যে যানবাহন থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে, সেগুলোকে বাজেয়াপ্ত করে ধ্বংস করতে হবে। কারখানার জন্য যে আইন আছে, সেগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন করলেই অনেকাংশে কমে যাবে দূষণ।’

মাহমুদুল ইসলাম সেলিম লিখেছেন, ‘পরিকল্পিত নগরী তৈরি করতে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। তা না হলে ঢাকার জনসংখ্যার চাপ কমানো যাবে না। ১৯৬২ রেকর্ড ধরে সরকারি জমি ও নদী পুনরুদ্ধার করতে হবে, পরিবেশবান্ধব প্রকল্প হাতে নিতে হবে, শহরে পার্ক নেই বললেই চলে। পার্ক, গাছপালা, খেলার মাঠ, লাইব্রেরি, খাবারের দোকান, প্রার্থনার ঘর সব কিছু মিলিয়ে পুরোনো পরিবেশ দিতে হবে নগরীর জনগণকে।’

এস এন সুলতান অনেক প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘প্রাইভেট কারের পরিমাণ কমাতে হবে, ব্যক্তিগত মালিকানার বাস কমিয়ে এবং ছোট পেট্রল চালিত গাড়ি কমিয়ে দোতলা বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে। মেট্রোরেলের ব্যবস্থা করতে হবে, কলকারখানা সব শহর থেকে দূরে নিতে হবে, ময়লা-আবর্জনা রিসাইকেলের ব্যবস্থা করতে হবে, সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।’

সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের কবলে থাকা রাজধানীগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। সম্প্রতি তোলা। ছবি: দীপু মালাকার
সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের কবলে থাকা রাজধানীগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। সম্প্রতি তোলা। ছবি: দীপু মালাকার

তাহমিদ ফাহিম লিখেছেন, ‘যেসব যানবাহন থেকে কালো ধোঁয়া বের হয়, তা বন্ধ করতে হবে। শহরের মধ্যে থাকা পোশাক কারখানা, ইটভাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন নামীদামি প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদনের কারখানা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া বিশুদ্ধকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তার আশপাশের নালা-নর্দমা বড় করতে হবে। আর ময়লা–আবর্জনা ফেলার সঠিক নিয়মকানুন করতে হবে।’

শাপলা লিখেছেন, ‘সবুজ বনায়নের বিকল্প কিছুই নাই।’

মো. রেজাউল করিম চৌধুরী লিখেছেন, ‘ঢাকার মতো নাগরিক সুবিধা অন্যান্য জেলায় থাকলে ঢাকার জনসংখ্যার চাপ কমে আসবে। তা ছাড়া রাজধানী ঢাকা থেকে সরিয়ে পরিকল্পিত নগরায়ণ করে অন্যত্র সরিয়ে নিলে ঢাকার ওপর চাপ কমে যাবে।’ আবদুল জলিল লিখেছেন, ‘বায়ুদূষণ রোধ করতে হলে কলকারখানাগুলোতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি শহরে অতিমাত্রায় গাছ লাগাতে হবে।’

জাহেদুল ইসলাম তপু লিখেছেন, ‘সরকারিভাবে উন্নত যান চলাচল ব্যবস্থা চালু করুন ও রাস্তার পাশে বেশি করে গাছ লাগান। ধুলো হয় এ রকম জায়গা ঘাস দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।’ আরিফ আহমেদ চৌধুরী লিখেছেন, ‘বায়ুদূষণ কি শুধু ঢাকাতেই হচ্ছে? বাংলাদেশের প্রতিটা শহরেই হচ্ছে। রাস্তায় বের হলেই এক ধুলোর সমুদ্রে পড়ে যাচ্ছে মানুষ। রাস্তা-মেরামত, খোঁড়াখুঁড়ি ইত্যাদি কাজের ফলে প্রচুর পরিমাণে ধুলোবালি বায়ুতে মিশে যাচ্ছে। কিন্তু এটা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা বাংলাদেশের মতো দেশের কোনো শহরেই নেই।’

সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের কবলে থাকা রাজধানীগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। সম্প্রতি তোলা। ছবি: দীপু মালাকার
সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের কবলে থাকা রাজধানীগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। সম্প্রতি তোলা। ছবি: দীপু মালাকার