দেয়ালে ফাটল, ঝুঁকিতে পাঠদান

ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে চলছে পাঠদান । গত বৃহস্পতিবার সকালে।  প্রথম আলো
ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে চলছে পাঠদান । গত বৃহস্পতিবার সকালে। প্রথম আলো

প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় আগে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল চট্টগ্রামের পটিয়ার ধলঘাট ইউনিয়নের আলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। ২৩ বছর আগে তৈরি বিদ্যালয় ভবনটি এমনিতেই জীর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের ছাদের বিমে ও দেয়ালে বড় আকারের ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল ধরেছে মেঝেতেও। শিক্ষক ও অভিভাবকদের আশঙ্কা, যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। তবে সংস্কার না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান।

আলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্র জানায়, ১৯২৮ সালে উপজেলা সদর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে ধলঘাট ইউনিয়নের আলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৬ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিদ্যালয়ের বর্তমান চার কক্ষবিশিষ্ট ভবনটি নির্মিত হয়। বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষক পদের মধ্যে বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন ও ১২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত কয়েকবার বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়েছে। তবে এরপরও নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

শিক্ষকেরা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ভবনের ছাদ চুঁইয়ে বর্ষাকালে বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে চেয়ার-টেবিলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও মালামাল ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। তবুও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের একতলাবিশিষ্ট ভবনের চারটি কক্ষ রয়েছে। একটি ছোট কক্ষে শিক্ষকদের কার্যালয়। শ্রেণিকক্ষ তিনটির মধ্যে দুটির ছাদের বিমে ফাটল ধরেছে। ওই দুটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা বিমের ফাটলের নিচে বসে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। বিদ্যালয়ের ভেতর ও বাইরে বিভিন্ন স্থানে দেয়ালেও ফাটল দৃশ্যমান। ছাদের রং উঠে গিয়ে পলেস্তারা বেরিয়ে এসেছে। পুরো বারান্দার মেঝে লম্বালম্বিভাবে ফেটে গেছে।

এ সময় কথা হয় বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাওয়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীরের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনে ফাটল দেখে তিনি নিজেও আতঙ্কিত। দ্রুত সংস্কার করা না হলে শিক্ষার্থীদের প্রাণহানিসহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শুভজিৎ দে বলে, শ্রেণিকক্ষের বিমের ফাটল দেখে তার বিদ্যালয়ে আসতে ইচ্ছে হয় না। ক্লাস করতে বসলে তার মনে আতঙ্ক ভর করে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুভাষ দাশ বলেন, বিদ্যালয়ের দুরবস্থার কথা জানিয়ে জরুরি ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণের আবেদন জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পটিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) বিশ্বজিৎ দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যালয়ের ভূমির প্রাথমিক জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের দরপত্র অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।