চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জমি অধিগ্রহণ শুরু

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়ে। প্রথম আলো ফাইল ছবি
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়ে। প্রথম আলো ফাইল ছবি

দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ফিল্ড বুক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নীলফামারী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আশপাশ এলাকায় এই কার্যক্রম শুরু হয়।

নীলফামারীর সৈয়দপুর ও দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ৯১২ একর জমির আওতায় অধিগ্রহণ করা হবে। নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহীনুর আলম, সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার ফিল্ড বুক তৈরিতে অংশ নেন।

সরেজমিনে জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলার লক্ষ্মণপুরের পশ্চিমপাড়ায় ফিল্ড বুক তৈরিতে কাজ করছিলেন কর্মকর্তারা। এসব বিষয় নিয়ে তাঁরা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় কথা হয় সৈয়দপুরের ইউএনও এস এম গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক করার ঘোষণা দেন। সেই ধারাবাহিকতায় মাঠপর্যায়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।’

সৈয়দপুর বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দরের আশপাশ এলাকায় ৯১২ একর জমি অধিগ্রহণের আওতায় আসবে। এর মধ্যে সৈয়দপুর উপজেলায় ৫৩৫ একর ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি, সরকারি জমি ৬০ একর, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৯ একর, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৬ একর, সৈয়দপুর সেনানিবাসের প্রায় ১৪ একর ও খাসজমি ১৩ একর। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নের ৩১৭ একর ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার বলেন, ৯১২ একর জমির মধ্যে কী কী অবকাঠামো রয়েছে এবং এর স্বরূপ সম্পর্কে ধারণা নিতে ফিল্ড বুক তৈরি হচ্ছে। এতে স্থানীয় জনগণ ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ স্বাক্ষর থাকবে।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা নবী আলম মণ্ডল বলেন, ‘ফিল্ড বুক তৈরিতে আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা দিয়ে যাব। সে ক্ষেত্রে আমাদের দাবি হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে জমির ন্যায্য মূল্য পান।’

ভুজারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা অতুল চন্দ্র সেনের ভাষ্য, ‘জমি অধিগ্রহণের আওতায় আমাদের পৈতৃক ভিটাও পড়েছে। ফলে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইও থাকবে না। তবু সরকারের এই বৃহৎ প্রকল্পে জমি দিতে পেরে আমরা আনন্দিত।’

সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক শাহীন আহম্মেদ বলেন, চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু করতে এরই মধ্যে অবকাঠামোর উন্নয়নকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। নির্মিত হচ্ছে নতুন টার্মিনাল ভবন ও পার্কিং জোন। বিমানবন্দর এলাকার মানুষ জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারেও সার্বিক সহযোগিতা করছে।

এ বিষয়ে নীলফামারী-৪ আসনের সাংসদ আহসান আদেলুর রহমান বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও কথা বলব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকেরা বাজারদরের তিন গুণ দাম পাবেন। ভূমিহীনদের পুনর্বাসনে করা হবে। খুব শিগগিরই সৈয়দপুরের আকাশে বিদেশি বিমান দেখতে পাব।’