২৯ স্থাপনা উচ্ছেদ, জব্দ করা মালামাল নিলামে

তুরাগতীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ। গতকাল সাভারের পঞ্চবটী এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
তুরাগতীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ। গতকাল সাভারের পঞ্চবটী এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

তুরাগ নদের তীরে গতকাল মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে দুটি বিনোদন কেন্দ্রের অবৈধ অংশ উচ্ছেদ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এ ছাড়া গতকালের অভিযানে ছোট-বড় ২৯টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এতে উদ্ধার হয়েছে দুই একর জমি।

ঢাকার সাভার উপজেলার বিরুলিয়া সেতু ও পঞ্চবটী এলাকায় তুরাগের উভয় তীরে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে জব্দ করা পাথর, বালু ও একটি এক্সকাভেটর নিলাম ডেকে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে বিআইডব্লিউটিএ। এ ছাড়া নদের জায়গা ভরাট করার অপরাধে একটি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গতকাল সকাল ১০টার দিকে বিরুলিয়া সেতুর পূর্ব দিক থেকে অভিযান শুরু হয়। সেখানে তুরাগ নদের জলাভূমি ভরাট করায় টেক্স ইউরোপ বিডি লি. নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে কয়েকটি বালুর গদি উচ্ছেদ ও সেখানে থাকা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর তুরাগ নদের দুই পাড়ে তুরাগ রিক্রিয়েশন ওয়ার্ল্ডের অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলা হয়। বেলা দুইটার দিকে অভিযান শুরু হয় একটি রেডিমিক্স কংক্রিট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে। এনডিই নামের ওই প্রতিষ্ঠানটির পাথর ও বালু মিশ্রণ করার যন্ত্রপাতি ভেঙে দেওয়া হয়।

এর আগে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগতীর থেকে উচ্ছেদ করা বেশির ভাগ স্থাপনাই ছিল আবাসিক। তবে গতকালের অভিযানে যেসব স্থাপনা ভাঙা হয়, তার বেশির ভাগই ছিল বাণিজ্যিক।

বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, গতকালের অভিযানে ২টি একতলা ও ১১টি আধা পাকা ভবন, ১০টি টিনের ঘরসহ মোট ২৯টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

অভিযান চলাকালে বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ও ঢাকা নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এ কে এম আরিফ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সামনে যত অবৈধ স্থাপনা আছে সব গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। তুরাগের অবশিষ্ট অংশে অভিযান শেষে অভিযান চালানো হবে বালু নদের দুই তীরে।

ঢাকার চারপাশের নদ–নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে অভিযান চালাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ। গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (সপ্তাহে তিন দিন করে) বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে প্রথম দফায় এবং গত ৫ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালানো হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় দফার অভিযানে ২ হাজার ৮৪২টি স্থাপনা অপসারণ করা হয়। উদ্ধার করা হয় ৬১ একর জমি।

গতকাল তুরাগ নদের তীরে তৃতীয় দফার অভিযান শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ।

বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা আরিফ উদ্দিন বলেন, প্রতি দফায় মাসে ১২ কার্যদিবস অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে তৃতীয় দফায় ১৫টি কার্যদিবস অভিযান চালানো হতে পারে।

কোটি টাকার মালামাল নিলামে

গতকালের অভিযানে জব্দ করা পাথর, বালু ও একটি এক্সকাভেটর তাৎক্ষণিক নিলাম ডেকে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ বলছে, এনডিই পঞ্চবটী এলাকায় নদের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছিল। ওই প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেওয়া হলেও তারা সেখান থেকে মালামাল সরায়নি। তাই গতকাল সেখানে থাকা সব যন্ত্র গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। স্তূপ করে রাখা পাথর ও বালু নিলাম ডেকে ১ কোটি ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিক্রি করে দেওয়া হয়। এর আগে বিরুলিয়া এলাকায় তুরাগতীরে ভরাটকাজে ব্যবহৃত একটি এক্সকাভেটর জব্দ করে নিলামে ১০ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। নিলাম পরিচালনা করেন বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নূর হোসেন।