৮ সিটি করপোরেশনে দুদকের অভিযান

ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ, নবায়ন, জন্মনিবন্ধন সনদসহ বিভিন্ন সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে দেশের আট সিটি করপোরেশন অফিসে একযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার এসব অভিযান চালায় সংস্থাটি।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, গত কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সিটি করপোরেশন নিয়ে দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (১০৬) অভিযোগ আসে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একযোগে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও রংপুর সিটি করপোরেশনে একযোগে অভিযান চালানো হয়।

দুদক জানিয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) অভিযান চলার সময় দেখা যায়, রাজস্ব বিভাগের কর অঞ্চল-১–এর অফিস সহায়ক মোহাম্মদ আলী গ্রাহকের কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্সের নির্ধারিত ফি ৪ হাজার ৫০০ টাকার পরিবর্তে ১৫ হাজার টাকা নিচ্ছেন। দুদকের দলটি তাঁকে ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে সোপর্দ করে। অভিযোগ আমলে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে দুদক জেনেছে, ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার সঙ্গে বহিরাগত একটি দালাল চক্রও সক্রিয়। তারা নগর ভবনের পেছনের গেটসংলগ্ন কয়েকটি ফটোকপির দোকানকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম পরিচালনা করে। দালাল ঠেকাতে দুদকের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) গিয়ে দেখা যায়, অফিসের ভেতরে বহিরাগত কিছু লোক চেয়ার টেবিল নিয়ে অফিস করছে, যারা ডিএনসিসির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। এ বিষয়ে রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। ব্যাপারটি তাঁর জানা নেই বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দুদকের দলটি এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে একটি রিপোর্ট দিতে বলেছে।

চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে অভিযানকালে দেখা যায়, ট্রেড লাইসেন্স ফি বাবদ গৃহীত অর্থের কোনো রেজিস্টার সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। সংগৃহীত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার কোনো রেকর্ড সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দুদককে তাৎক্ষণিকভাবে দেখাতে ব্যর্থ হন। তাঁরা এ–সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র একত্র করে দুদক অফিসে পাঠানোর অঙ্গীকার করেন।
এ ছাড়া রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও রংপুর সিটি করপোরেশনে অভিযানকালে কাজকর্মে বেশ কিছু অসংগতি পায় দুদক দল। দুদকের দলগুলো ট্রেড লাইসেন্স প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করে সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি ফিয়ের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কমিশনে প্রতিবেদন দেবে দুদকের দলগুলো।