দুই পাশের গাছ কর্তন, ঝুঁকিতে রেলপথ

ভৈরব রেলওয়ে সেতুর দুই পাশ থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় লোকজন। গত মঙ্গলবার।  প্রথম আলো
ভৈরব রেলওয়ে সেতুর দুই পাশ থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় লোকজন। গত মঙ্গলবার। প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে সেতুর ভৈরব প্রান্তের দুই পাশে লাগানো গাছগুলো কেটে নেওয়া হচ্ছে। গাছ কেটে নেওয়ায় লাইনের দুই পাশ এখন বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে। এতে লাইনের কাছ থেকে মাটি সরে রেলপথটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।

ভৈরব রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির অবস্থান মেঘনা নদীর ভৈরব মোহনায়। এক প্রান্ত ভৈরব এবং অপর প্রান্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে। সেতুটি নির্মাণ হয় ব্রিটিশ শাসনামলে। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রেলওয়ে সেতু। ভৈরব রেলওয়ে সেতু হিসেবে পরিচিত হলেও অফিশিয়াল নাম ‘শহীদ হাবিলদার আ. হালিম রেলওয়ে সেতু’। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালী, ময়মনসিংহ-চট্টগ্রামসহ পূর্বাঞ্চলীয় জোনের ট্রেনগুলো এই সেতু ব্যবহার করে চলাচল করে। সেতুটি বেশ উঁচু। তাই উঁচু স্থানের মাটি ধরে রাখতে রেলওয়ে লাইনের দুই পাশে গাছ লাগানো হয়। গাছগুলো মাটি ধরে রাখতে সহায়ক ছিল। বিশেষ করে গাছের কারণে টানা বর্ষণেও দুই পাশের মাটি সরে যেতে পারত না।

তিন বছর আগে থেকে গাছের সংখ্যা কমতে শুরু করে। বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকটি গাছ আছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ কেটে নিয়ে গেছেন স্থানীয়রা। কিছু গাছ ঝড়ে উপড়ে পড়েছে। আবার কিছু গাছ মরে গেছে।

গত মঙ্গলবার দেখা যায়, বেশ দূরত্বে কয়েকটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে। বেশির ভাগ স্থান ফাঁকা। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কয়েকটি স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়ে মাটি সরে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা–কর্মচারী জানান, সেতুর নিরাপত্তায় পুলিশের একটি বিশেষ দলও কাজ করে। এরপরও গাছ চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। এদিকে এখন বৃষ্টি হলেই মাটি সরে যায়। তখন রেলওয়েকে তাৎক্ষণিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হচ্ছে। এতে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বেড়ে গেছে।

পেশাগত প্রয়োজনে পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকার হাফিজ মিয়া নামে এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে সেতু এলাকায় আছেন। হাফিজ বলেন, যাঁরা গাছ কেটে নিয়ে যান, তাঁরা গরিব। মরা গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এসে সঙ্গে জীবিতও গাছও কেটে নিয়ে যান। পুলিশ এলে তাদের কাছে মানবিক বিষয়টি সামনে এনে মরা গাছ কেটে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। গাছ কাটা বন্ধে নানা কারণে পুলিশও কঠোর হয় না। সমাজ সচেতনদের অনেকে রেলওয়ের কর্মকর্তাদের নজরে এনেও ফল পাননি। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ভৈরব বাজার ঘাটের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, সেতু এলাকার রেলপথের সামান্য সমস্যা দেখা দিলে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। মাটি সরে গেলেও দ্রুত প্রতিকার করা হচ্ছে।