আটটি সরকারি দপ্তরে দুদকের অভিযান

পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রাহক হয়রানি, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে পল্লী বিদ্যুতের চারটি দপ্তরে অভিযান চালিয়েছে দুদক এনফোর্সমেন্ট দল। আজ বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন জেলায় এ অভিযান চালানো হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আরও চারটি অভিযান চালায় সংস্থাটি।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংস্থার কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি দল ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযান চালায়। অভিযান চলার সময় দৌলতপুরে এক দালালকে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের সময় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই মাসের কারাদণ্ড দেয়। একই অপরাধে আরেক দালালকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দুদকের ফরিদপুরের জেলা কার্যালয় থেকে মধুখালী উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযান চালিয়ে গ্রাহকসেবা প্রদানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পায়। দুদক দলের উপস্থিতি টের পেয়ে দালালেরা পালিয়ে যায়।

ফুলবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযান চালায় দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়। অভিযানকালে দেখা যায়, ওই অফিসে গ্রাহক ভোগান্তি মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন অনিয়ম, দীর্ঘসূত্রতার সঙ্গে জড়িত। একটি সেচ প্রকল্পের জন্য বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যায়। দুদকের দলটি এ অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধানের সুপারিশ করে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দেবে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানির অভিযোগে সেখানে অভিযান চালিয়েছে দুদকের আরেকটি দল। অভিযান চালানোর সময় দেখা যায়, সাধারণ সেবাপ্রত্যাশীরা লাইসেন্স প্রদানকারী কর্মকর্তার কাছেই পৌঁছাতে পারেন না। তার আগেই অফিসের কিছু কর্মচারী অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে লাইসেন্স প্রদান কার্যক্রমে অনিয়ম করেন। এই প্রক্রিয়ায় প্রতি লাইসেন্স বাবদ ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে নিলেও কোনো রসিদ দেওয়া হয় না। ওই দপ্তরের লাইসেন্স শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা বজলুর রশিদ ও লাইসেন্স প্রদানকারী কর্মকর্তা মো. আবদুর রশিদের অনিয়মের বিষয়ে দুদক দলটি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে অবহিত করেন। তিনি ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

দুদকের একই দল পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই একটি পেট্রলপাম্প নির্মাণের অভিযোগ খতিয়ে দেখে। গাজীপুর চৌরাস্তায় অবস্থিত এসএস পাম্প নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর একাধিকবার আপত্তি দিলেও সেটা স্থাপিত হচ্ছে বলে অভিযোগ পায় দুদক। দলটি এ–সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করে। যাচাই-বাছাই করে তারা কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
গাইবান্ধা সরকারি কলেজে স্নাতক চতুর্থ বর্ষ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম ও মুঠোফোন ব্যবহৃত হচ্ছে এমন একটি অভিযোগ দুদকের গোচরে আসে। তাদের অনুরোধে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গতকাল বুধবার ওই কলেজে অভিযান চালিয়ে ১২১টি মুঠোফোন উদ্ধার করেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্যদের সতর্ক করেন।