টিএসসিতে পুলিশ-শিক্ষার্থী হাতাহাতি

বন্ধুর সঙ্গে রাস্তায় হাঁটছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী৷ হঠাৎ পেছন থেকে তাঁর গায়ে ধাক্কা দেয় এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেল৷ এটিকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে৷ মারধরে আহত ওই পুলিশ সদস্য রাজারবাগ হাসপাতালে এবং ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি হন৷

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে৷ আহত শিক্ষার্থীর নাম এলিচ আল মাহমুদ আকাশ৷ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী৷ আর আহত পুলিশ সদস্য হলেন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার ট্রাফিক সার্জেন্ট সুমন আহমেদ৷

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ঘটনার সময় টিএসসি থেকে বাংলা একাডেমিমুখী রাস্তায় বন্ধুর সঙ্গে হাঁটছিলেন আকাশ। হঠাৎ পেছন থেকে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল নিয়ে তাঁকে ধাক্কা দেন ট্রাফিক সার্জেন্ট সুমন। এতে আকাশ মাটিতে পড়ে যান। এ সময় তাঁদের মধ্যে কয়েক দফা কথা-কাটাকাটি হয়৷ এর মধ্যে সার্জেন্ট সুমন বাইক নিয়ে চলে যেতে চাইলে আকাশ বাধা দেন। তখন সুমন আকাশকে মারধর করেন৷ এ সময় টিএসসি এলাকায় দায়িত্বরত ৫-৬ জন পুলিশ সদস্য সুমনের সঙ্গে যোগ দেন৷ পরে খবর পেয়ে সুমনের হল থেকে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন৷ একপর্যায়ে শাহবাগ থানা থেকে ১৫-২০ জন পুলিশ সদস্য এসে সুমনকে নিয়ে যেতে চাইলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বাধা দেন এবং সুমনকে মারধর করেন৷

ঘটনার পর ট্রাফিক সার্জেন্ট সুমন আহমেদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ পরে তাঁকে রাজধানীর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়৷ আর শিক্ষার্থী আকাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি হন৷

শিক্ষার্থী এলিচ আল মাহমুদ আকাশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন সদস্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে মারধর করেছেন। আমি তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’ তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে ট্রাফিক সার্জেন্ট সুমন আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি৷

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সাহেব আলী প্রথম আলোকে বলেন, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনাটির বিষয়ে তাঁরা অবহিত আছেন৷ সার্জেন্ট সুমনকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরে রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়েছে৷

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, দুপক্ষের বক্তব্যই তাঁরা শুনেছেন৷ দোষী যিনিই হোন না কেন, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।