পাঁচ কিলোমিটারের চরম ভোগান্তি

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গাজীপুর-গোয়ালমারী সড়কের বেহাল। ছবি: আবদুর রহমান
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গাজীপুর-গোয়ালমারী সড়কের বেহাল। ছবি: আবদুর রহমান

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গাজীপুর-গোয়ালমারীর পাঁচ কিলোমিটার সড়ক এখন এলাকাটির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক দিন সংস্কারের অভাবে সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের এই অংশ দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। আগামী বর্ষার আগে সড়কের সংস্কারকাজ শুরু না করলে যানবাহন চলাচল যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উপজেলার সেন্দী গ্রামের কৃতী খেলোয়াড় মিজানুর রহমান বলেন, এ সড়ক দিয়ে উপজেলার গাজীপুর, সেন্দী, দৌলতেরকান্দি, গাবরাকান্দি, ঝাউতলী, মন্থন, লামছড়ি, জুরানপুর গ্রামের বাসিন্দা, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ প্রায় পাঁচ হাজার লোক প্রতিদিন একাধিকবার চলাচল করেন। সড়কটি প্রায় ১৫ বছর ধরে একই অবস্থায় থাকায় যাতায়াতে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক উপজেলার উত্তর গাজীপুর গ্রামের রায়হান উদ্দিন ও দৌলতেরকান্দি গ্রামের ইয়াছিন মিয়া বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ায় ওই রাস্তা দিয়ে অটোরিকশা চালাতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় তাঁদের। ১০ মিনিটের পথ অতিক্রম করতে আধা ঘণ্টা সময় লেগে যায়। গাড়ির চাকা ঘন ঘন ফেটে যায়। ইঞ্জিনের ক্ষতি হয়। দুই-তিন দিন পরপর মেরামতের জন্য গ্যারেজে যেতে হয়।

দক্ষিণ গাজীপুর গ্রামের কৃষক মুর্শিদ মিয়া ও রকিব উদ্দিন বলেন, সড়কের এমন অবস্থায় ধুলায় বাড়িতে থাকা কষ্টকর হচ্ছে।

দাউদকান্দি আদর্শ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া ইসলাম বলে, এ সড়ক দিয়ে এক দিন স্কুলে গেলে পরের সাত দিন অসুস্থ লাগে।

গাবরাকান্দি গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়া, লামছড়ি গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, গর্তে ভরা সড়ক দিয়ে অসুস্থ রোগীদের নিয়ে যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে যায়। অনেক সময় অটোরিকশাচালকেরা রাজি হন না। তখন সময়মতো হাসপাতালে রোগী নিয়ে যেতে অসুবিধা হয়।

গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের গাজীপুর, সেন্দী, দৌলতেরকান্দি, লামছড়ি অংশে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে পুরোনো ইটের রাস্তা বের হয়ে গেছে।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আহসান আলী বলেন, সড়কের বর্তমান অবস্থার কথা জানিয়ে এলজিইডি কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলীকে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করতে বলা হয়েছে। প্রায় চার বছর আগে দরপত্র আহ্বানের পর এক ঠিকাদার সড়কের মেরামতকাজ শুরু করেন। কিছুদিন কাজ করার পর অজ্ঞাত কারণে তিনি তিন বছর ধরে কাজটি ফেলে রাখেন। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও কাজটি শুরু করেননি তিনি। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আগামী দুই বছর তিনি সরকারি কাজ করতে পারবেন না। তাঁর জামানত থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ কেটে নেওয়া হবে।