পাটকল বন্ধ রেখে শ্রমিকদের রাজপথ-রেলপথ অবরোধ

খুলনায় পাটকল শ্রমিকেরা ৯ দফা দাবিতে আজ সোমবার সকালে খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। নতুন রাস্তা, খুলনা, ১৫ এপ্রিল। ছবি: সাদ্দাম হোসেন
খুলনায় পাটকল শ্রমিকেরা ৯ দফা দাবিতে আজ সোমবার সকালে খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। নতুন রাস্তা, খুলনা, ১৫ এপ্রিল। ছবি: সাদ্দাম হোসেন

যশোরের দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ (জেজেআই) ও কার্পেটিং জুট মিলসের শ্রমিকেরা দ্বিতীয় দফায় ৯৬ ঘণ্টার টানা ধর্মঘটে নেমেছেন। বকেয়া মজুরি আদায়, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ ও সিবিএ-নন সিবিএর ডাকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘটের অংশ হিসেবে আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অভয়নগর উপজেলার রাজঘাট এলাকায় যশোর-খুলনা মহাসড়ক এবং খুলনা-ঢাকা রেলপথ অবরোধ করেন শ্রমিকেরা।

শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, আজ সোমবার ভোর ছয়টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট শুক্রবার ভোর ছয়টায় শেষ হবে। এ সময় প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা করে রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। এর আগে একই দাবিতে ২  থেকে গত ৫ এপ্রিল ৭২ ঘণ্টার এ ধর্মঘট করেন পাটকলশ্রমিকেরা।

জানা গেছে, আজ সোমবার ধর্মঘটের কারণে পাটকল দুটিতে কোনো উৎপাদন হয়নি। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শ্রমিকেরা রাজঘাট এলাকায় যশোর-খুলনা মহাসড়কের ওপর অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা কাঠের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করেন। মাঝেমধ্যে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। কিছু শ্রমিক খুলনা-ঢাকা রেললাইনের ওপর অবস্থান নেন। এ সময় যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজের সামনে যশোর-খুলনা মহাসড়কে সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন পাটকলটির সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ মল্লিক, শ্রমিকনেতা জিয়াউদ্দিন পলাশ, ইসরাইল সরদার, গোলাম আযম প্রমুখ। একই সময়ে কার্পেটিং জুট মিলসের সমাবেশে বক্তব্য দেন পাটকলটির সিবিএর যুগ্ম সম্পাদক মোজাফফর আহমেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কার।

কার্পেটিং জুট মিলসের সিবিএ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দাবি ৯ দফা বাস্তবায়নের।’ যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজে সিবিএর অর্থ সম্পাদক ইসরাইল সরদার বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজঘাট এলাকায় রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ করেছি। বেলা ১১টার দিকে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান গাড়িতে করে খুলনা থেকে যশোর-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে যশোর বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। অবরোধে তিনি কিছুক্ষণের জন্য আটকা পড়েন। তিনি গাড়িতে বসেই ঘোষণা দেন, “আপনারা আশ্বস্ত থাকেন, আপনাদের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে বৈঠক করতে ঢাকায় যাচ্ছি।”’

রাজপথ-রেলপথ অবরোধ করায় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত যশোর-খুলনা মহাসড়কে কোনো যানবাহন চলেনি। তবে নওয়াপাড়া থেকে যশোর পর্যন্ত কিছু বাস চলাচল করেছে।

নওয়াপাড়া রেলের স্টেশনমাস্টার মহসিন রেজা বলেন, অবরোধ চলাকালে খুলনা স্টেশনে আটকা পড়ে রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস, বেনাপোলগামী কমিউটার ও পার্বতীপুরগামী রকেট মেইল ট্রেন। দুপুর ১২টার পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
যানবাহন ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে যাত্রীরা।