কর্ণফুলী নদীর তীরে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা নেই


চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আইনগত বাধা নেই। ওই স্থাপনা উচ্ছেদ বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের করা আবেদন আজ সোমবার খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ।

আদালতে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও শেখ ফজলে নূর তাপস। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

পরে মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট এক রায়ে কর্ণফুলী নদীর তীরে থাকা ২ হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা সরাতে নির্দেশ দেন। এই রায়ের পর চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে। নদীর সীমানায় থাকা আড়াই কিলোমিটারের মতো এলাকাজুড়ে শত শত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়, যার মধ্যে মাঝিরঘাট এলাকায় কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের স্থাপনা ও ভবন ছিল। শিপ বিল্ডার্সের অবৈধ স্থাপনা আংশিক উচ্ছেদ করা হয়।

আইনজীবী সূত্র বলছে, এ অবস্থায় নিজেদের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি চেম্বার আদালতে আবেদন করে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড। সেদিন শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের স্থাপনার ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার শুনানি হয়।

দেরিতে আবেদন করায় আপিল বিভাগ কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, এর ফলে মাঝিরঘাট এলাকায় নদীর তীরে থাকা কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ভবনের অবৈধ একাংশ ও স্থাপনা উচ্ছেদে আইনগত কোনো বাধা নেই।

কর্ণফুলী নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ৯ বছর আগে হাইকোর্টে রিট করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইআরপিবি)। এর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট কয়েক দফা নির্দেশনাসহ রায় দেন। রায়ে বলা হয়, বিষয়টি চলমান পর্যবেক্ষণে থাকবে। এরপর চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসন ওখানে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালায়, যা পাঁচ দিন পর থেমে যায়। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান না থাকার পরিপ্রেক্ষিতে এইচআরপিবি ৭ এপ্রিল হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন।

এর শুনানি নিয়ে ৯ এপ্রিল হাইকোর্ট চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা অবিলম্বে অপসারণ করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। অপসারণের আদেশ বাস্তবায়ন করে ৩০ দিনের মধ্যে বন্দরের চেয়ারম্যানকে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়। পরবর্তী আদেশের জন্য ১৯ মে দিন ধার্য রয়েছে।