সাংবাদিক মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি

জামালপুরে চিকিৎসায় অবহেলার কারণে সাংবাদিক শফিক জামানের মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জামালপুর সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান এ নির্দেশ দেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক মো. আবুল কাসেমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২১ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। তদন্ত চলাকালে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক সিরাজুল ইসলামকে তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন এবং জামালপুরের সিভিল সার্জন গৌতম কুমার রায়কে দায়িত্ব দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।

সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিক শফিক জামানের চিকিৎসায় গাফিলতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। গাফিলতির জন্য দায়ী চিকিৎসক শনাক্ত করা, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ইনডোর ও আউটডোরের চিকিৎসা ব্যবস্থা ছাড়াও হাসপাতালের সার্বিক চিত্রসহ প্রয়োজনীয় সুপারিশের একটি প্রতিবেদনও আগামী সাত দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের গাফিলতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। প্রত্যেক মানুষকেই হাসপাতাল থেকে সঠিক এবং ভালোভাবে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।’

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর। এতে জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সাংসদ মো. মোজাফফর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম, সিভিল সার্জন গৌতম কুমার রায়, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমানসহ স্বাস্থ্য বিভাগের সব কর্মকর্তা ও জামালপুরে কর্মরত সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

টিভি চ্যানেল এনটিভি ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার জামালপুর জেলা প্রতিনিধি শফিক জামান বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে গত শুক্রবার সকালে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক গ্যাসের ট্যাবলেট লিখে দিয়ে তাঁকে বাসায় গিয়ে বিশ্রামের পরামর্শ দেন। ওই দিন বিকেলে তিনি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে আবারও জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর ইসিজি করানো হয়। ওই ইসিজি রিপোর্টটি কোনো কার্ডিওলজিস্টকে না দেখিয়ে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়েই সাংবাদিক শফিক জামানকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়মনসিংহে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।