বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

নানা অনিয়মের খবর পেয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার সংস্থাটি এ অভিযান চালায়। দুদক বলছে, ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম এবং নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরে নতুন জাহাজের নকশা অনুমোদন, সার্ভে সার্টিফিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে।

দুদকের উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য অভিযানের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

দুদক জানায়, বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১০ লাখ টাকার অতিরিক্ত ব্যয়ের জন্য ই-টেন্ডারিং পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু ১০ লাখ টাকার নিচে ম্যানুয়াল টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ ক্ষেত্রে অনিয়মের সুযোগ রয়েছে। অভিযান চলার সময় দুদক সংস্থাটিকে সকল ক্ষেত্রেই ই-টেন্ডারিং পদ্ধতি অনুসরণ করার সুপারিশ করেছে।

নতুন জাহাজের নকশা অনুমোদনে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদক দল জানতে পারে, ২০১৮ সালে ২২০টি নকশা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত থাকলেও নতুন নকশা অনুমোদন হয়েছে ৩৪৫টি। এ ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে বলে দলটি মনে করছে। আবেদন বিবেচনার ক্ষেত্রে ক্রম না মেনে যারা পরে আবেদন করেছেন তাদের নকশাও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে আগে পাশ করা হয়েছে বলে দুদক জেনেছে।
অন্যদিকে জাহাজের সার্ভে সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে অবৈধ অর্থ অর্জনের উচ্ছেদে দেরি করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়। সার্ভেয়ারদের কোনো প্রতিবেদন দেওয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকায় তারা এ বিষয়ে স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নেন। সার্ভেয়ারদের সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে রিপোর্ট নেওয়ার জন্য দুদকের দলটি বিআইডব্লিউটিএর প্রধান প্রকৌশলীকে সুপারিশ করে।
পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ট টেস্টিং ইনস্টিউটিউশনের (বিএসটিআই) বিভিন্ন কার্যক্রমে অনিয়ম খতিয়ে দেখতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে আরেকটি অভিযান চালায় দুদক। ওই কার্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে দুদকের দলটি।
বরগুনায় ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকিতে শ্রেণি কার্যক্রম চলছে এমন অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের আরেকটি দল অভিযান চালায়।
দিনাজপুর সদর ভূমি অফিসে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে সেখানে আরেকটি অভিযান চালায় দুদক। দলটি সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানান। ওই অফিসের যেসব কর্মচারীর বিরুদ্ধে সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি করার অভিযোগ আছে তাঁদের সতর্ক করা হয়।
সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে আরেকটি অভিযান চালায় দুদকের আরেকটি দল। ওই অফিসে বেতন বিলসহ বিভিন্ন বিল প্রক্রিয়াকরণে যে সময় লাগার কথা তার চেয়ে বেশি সময় লাগে বলে দলটি জানতে পারে। এ কার্যক্রমে ঘুষ দুর্নীতির সুযোগ রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে দুদকের কাছে মনে হয়েছে। এ অনিয়ম বন্ধে দুদকের দলটি প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. কবির হোসেনকে নির্দেশনা দেয়। সকল অনিয়ম নিষ্পত্তিতে তৎপর হওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।