বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম শুরু

রাজধানীর হাতিরঝিলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। তবে পুরো ভবনটি কখন কীভাবে ভাঙা হবে, এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আজ মঙ্গলবার সকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বিজিএমইএ ভবনে যান রাজউকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে রাজউক। ছবি: দীপু মালাকার
বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে রাজউক। ছবি: দীপু মালাকার

রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) খন্দকার অলিউর রহমান জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিজিএমইএ ভবনে এসেছেন তাঁরা। ভবনটিতে এখনো দু–একটি অফিস রয়েছে। তাদের মালামাল দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এরপর বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য লোক ডাকা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিজিএমই ভবনে এসেছে রাজউক। ছবি: দীপু মালাকার
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিজিএমই ভবনে এসেছে রাজউক। ছবি: দীপু মালাকার

পুরো ভবন আজই ভেঙে ফেলা হবে কি না, জানতে চাইলে খন্দকার অলিউর রহমান তা নিশ্চিত করতে পারেননি। তিনি বলেন, এই যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তা ভবন ভাঙার কার্যক্রমেরই অংশ।

বিজিএমইএ ভবনের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: দীপু মালাকার
বিজিএমইএ ভবনের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: দীপু মালাকার

এর আগে গতকাল সোমবার রাতে রাজউক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে পুরো ভবন ভেঙে ফেলা হবে।

বিজিএমইএ ভবনের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: দীপু মালাকার
বিজিএমইএ ভবনের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: দীপু মালাকার

তবে কবে, কখন এই ভবন ভেঙে ফেলা হবে, সে বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যানও নিশ্চিত করেননি।

ভবনের সামনে পুলিশ, সাংবাদিক ও কৌতূহলী মানুষের ভিড়। ছবি: দীপু মালাকার
ভবনের সামনে পুলিশ, সাংবাদিক ও কৌতূহলী মানুষের ভিড়। ছবি: দীপু মালাকার

২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটিকে ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো’ উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে, যা ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়। রায়ে বলা হয়, ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজউককে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হলো। পরে ভবন ছাড়তে উচ্চ আদালতের কাছে সময় চায় বিজিএমইএ। প্রথমে ছয় মাস এবং পরে সাত মাস সময়ও পায় তারা। সর্বশেষ গত বছর নতুন করে এক বছর সময় পায় সংগঠনটি। সে সময় তারা মুচলেকা দেয়, ভবিষ্যতে আর সময় চাওয়া হবে না।

বিজিএমইএ ভবনের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: দীপু মালাকার
বিজিএমইএ ভবনের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: দীপু মালাকার

কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটি দুটি বেসমেন্টসহ ১৬ তলা। বিজিএমইএ ব্যবহার করে চারটি তলা। বাকি জায়গা দুটি ব্যাংকসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তবে আইনি জটিলতার কারণে তাদের মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। ভবনের ওপরের দুই তলা নিয়ে বিলাসবহুল ‘অ্যাপারেল ক্লাব’ করা হয়েছে। সেখানে সংগঠনের সদস্যদের জন্য সুইমিং পুল, ব্যায়ামাগার, রেস্টুরেন্ট ও সভাকক্ষ আছে। বড় আকারের একটি মিলনায়তনও আছে।