টেকসই ও আরামের পাশাপাশি স্টাইলে জোর দিচ্ছে বাটা

১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগে শেষ হয় বাটা ফ্যাশন উইকএন্ড ২০১৯। গত রোববার প্রাগ শহরের জোফিন প্রাসাদে।  ছবি: প্রথম আলো
১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগে শেষ হয় বাটা ফ্যাশন উইকএন্ড ২০১৯। গত রোববার প্রাগ শহরের জোফিন প্রাসাদে। ছবি: প্রথম আলো

‘বাটার শুধু ঐতিহ্য আছে, তা-ই নয়, বাটার আছে ভবিষ্যৎ,’ বললেন বাটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যালেক্সিস নাসারদ। তিনি বলেন, বাটা কেবল আরামদায়ক, টেকসই আর সুলভ জুতা আনছে না, তাঁরা এখন স্টাইলের ওপর জোর দিচ্ছেন। পৃথিবীর অসংখ্য শোরুমে প্রতি সপ্তাহে আনছেন এক জোড়া নতুন নকশার জুতা।

১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগ শহরের জোফিন প্রাসাদে হয়ে গেল বাটার ফ্যাশন উইকএন্ডের সবচেয়ে জমকালো অনুষ্ঠানটি। উপস্থাপক ছিলেন বাটার ঐতিহ্য পরিচালক চার্লস পিগনাল। আলোর ঝলকানিতে ঝলমল করে উঠল চিত্ত। সংগীত, নৃত্য ও ক্যাটওয়াকে নানা রকমের পরিবেশনায় ফুটে উঠল বাটার নতুন হয়ে ওঠার প্রতিজ্ঞা আর প্রয়াস। দ্য ইভালুশন অব স্টাইল—এই বার্তা ফুটে উঠল মঞ্চে।

বাটার বৈশ্বিক মার্কেটিং প্রধান ইয়ানা বারবাতি চাদোভা বলেই রেখেছিলেন, ক্যাটওয়াকে শুধু লম্বা তন্বীদের দেখা যাবে না, ছোট-বড়, বয়স্ক, কিশোর, পৃথুলা, ক্ষীণকায়া, সাদা-কালো—সব ধরনের মডেলদের দেখা যাবে। তা-ই দেখা গেল।

বাটা আয়োজন করেছিল নবীন নকশাকারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। চেক রিপাবলিক, ইতালি আর কেনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিলেন নতুন যুগের জুতার নকশা প্রতিযোগিতায়। পুরস্কার জিতে নিলেন প্রাগের আর্ট, আর্কিটেকচার ও ডিজাইন একাডেমির নাতালি নেপোভিমোভা, ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তুবসিন বাতকু আর নাইরোবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইপরিয়ান কবিতা কিশ্বিলি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট আর ডিজাইনের শিক্ষকেরা তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

বাটার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের নাম ঘোষণা করা হলো মঞ্চ থেকে। চেক বিশ্বসুন্দরী তাতিয়ানা আর তাঁর স্বামী অন্দ্রে মঞ্চে উঠলেন বাটার দূত হয়ে। আর উঠলেন নিধিম কোচার। তাঁর একটা পা লোহালক্কড়ের। তিনি পেশাদার বডিবিল্ডার। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক পা হারিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। বাটার দূত তিনি।

বাটা বলছে, ‘যে যেমন, তেমনিভাবে চলুক। তুমি তুমিই থাকো। আর তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ, তোমার জুতা তোমার সঙ্গে মানানসই হোক। স্বচ্ছন্দ থাকো।’

নয়নাভিরাম ফ্যাশন শো, সংগীত, নৃত্য, ভিডিও প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো তাদের মহারজনী।

দেশ-বিদেশের সাংবাদিক, ব্লগার ও তারকারা অংশ নিচ্ছেন এই ফ্যাশনের আসরে। যেমন এসেছিলেন মালয়েশিয়ার চলচ্চিত্র নায়িকা আমিরা। তিনি এসেছিলেন স্বামীকে নিয়ে। তাঁদের দুই বছরের একমাত্র পুত্রসন্তানকে রেখে এসেছেন নিজের দেশে। তাই মন পড়ে আছে তাঁর ঘরে। নিজের ফেসবুকে তিনি গুনছেন শিশুকে ছেড়ে থাকার কত দিন হলো।

আমরাও—আমি আর বাংলাদেশের বাটার বিপণন প্রধান ইফতেখার মল্লিক, দেশের পয়লা বৈশাখের আয়োজনের কথা ভাবছি। দুই ডিগ্রি তাপমাত্রার ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে আমরা বাটার জুতা পায়ে হাঁটছি ফ্রানৎজ কাফকা মিউজিয়ামের গোলকধাঁধায় কিংবা বইয়ের দোকান শেক্‌সপিয়ারের বেসমেন্টে। বাইরে বেরিয়ে আমি পরে নিই হাতমোজা আর গেয়ে উঠি, ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। ইফতেখার মল্লিক রাস্তার ধারে প্রজ্বলিত অগ্নিশিখায় হাত মেলে ধরে শীত তাড়ান। আমি গাই—‘অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’।