প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে মারধর!

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জামালপুর সদর উপজেলায় এক কলেজছাত্রীকে মারধরের অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলম (৩২) নামের এক বখাটেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে জামালপুর পৌর শহরে এ ঘটনা ঘটে।

বখাটে জাহাঙ্গীর আলম জামালপুর পৌর শহরের বনপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন দোকান কর্মচারী। আজ মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাঁকে জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে।

মামলার এজাহার ও কলেজছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে বখাটে জাহাঙ্গীর আলম স্নাতক প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে রাস্তা-ঘাটে উত্ত্যক্ত ও প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। আজ সকাল নয়টার দিকে ওই কলেজছাত্রী কোচিং শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। শহরের বনপাড়া এলাকায় পৌঁছালে ওই বখাটে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেন। তিনি রাজি না হওয়ায় প্রকাশ্যে প্রথমে চড়-থাপ্পড় ও পরে লাথি মারতে থাকেন জাহাঙ্গীর। মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলেও তিনি মারধর করতেই থাকেন। পরে স্থানীয় লোকজন ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। ওই ছাত্রী বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা করেন।

কলেজছাত্রীর মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামী মারা গেছেন অনেক আগে। মেয়েটা পড়ালেখায় খুব ভালো হওয়ায় খুব কষ্টে খরচ যোগাই। গত তিন মাস ধরে ওই বখাটে আমার মেয়েকে রাস্তা-ঘাটে বিরক্ত করছিল। এই শহরে আমাদের তেমন কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই। ফলে আমরা এক রকম ভয়ের মধ্যেই ছিলাম। মেয়েটাকে আজ রাস্তায় প্রকাশ্যে মারধর করেছে। ওকে হাসপাতালে নিয়েছি। মানবাধিকার সংগঠনের নেতা জাহাঙ্গীর সেলিমের সহযোগিতায় থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই বখাটের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে অন্য কোনো বখাটে এই ধরনের কাজ আর না করতে পারে।’

মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘এই শহরে প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। একজন স্নাতক পড়ুয়া ছাত্রীকে এভাবে প্রকাশ্যে মারধরের বিষয়টি ন্যক্কারজনক। আমি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটিকে নিয়ে হাসপাতালে যাই এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে যাই। বখাটের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা হলে এ ধরনের ঘটনা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।’

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল দশটার দিকে ওই কলেজ ছাত্রী জরুরি বিভাগের চিকিৎসা নিতে আসেন। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি চলে গেছেন।’

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণের মধ্যেই থানায় মামলা নেওয়া হয়। মামলার একমাত্র আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতকে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।