খুলনার পাটকল শ্রমিকেরা কাজে ফিরেছেন

খুলনাসহ সারা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে গতকাল সোমবার রাতেই। এর ফলে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আবারও শ্রমিকদের পদচারণায় কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে পাটকলগুলো। বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ ওই ধর্মঘট ও রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল।
বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক ও খুলনার ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মো. মুরাদ হোসেন বলেন, শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে গতকাল সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত শ্রম অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে বৈঠক হয়। বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, বিজেএমসির চেয়ারম্যান ও শ্রম মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে চলা ওই বৈঠক থেকে শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এ কারণে ধর্মঘটসহ সব কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। সকাল থেকেই শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
ইস্টার্ন জুট মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, বৈঠক থেকে আগামী ২৫ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া ১০ সপ্তাহের মজুরি দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ১৮ মের মধ্যে মজুরি কমিশন শ্রমিকদের হাজিরা খাতায় লিপিবদ্ধ করা হবে। আর শ্রমিকদের বাকি দাবিগুলো ৮ মের মধ্যে বিজেএমসির চেয়ারম্যান শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন। ওই দাবিগুলো মেনে না নেওয়া হলে আবারও শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হবে বলে জানান তিনি।
বকেয়া মজুরি প্রদান, মজুরি কমিশন গঠনসহ ৯ দফা দাবিতে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছিলেন পাটকল শ্রমিকেরা। দুই দফায় শ্রমিকদের দাবি মেনে না হওয়ায় সোমবার থেকে তৃতীয় দফা আন্দোলনে নেমেছিলেন শ্রমিকেরা।
তৃতীয় দফার প্রথম পর্যায়ে টানা চার দিনের ধর্মঘট ও চার ঘণ্টা করে রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচির প্রথম দিনেই শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিকদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পি এফ গ্র্যাচুইটি প্রদান, মৃত শ্রমিকের বিমার বকেয়া প্রদান, টার্মিনেশন ও বরখাস্ত হওয়া শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, পাট মৌসুমে পাট ক্রয়ের অর্থ বরাদ্দ, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে আধুনিকায়ন করা।