আগামী বছরের শুরু থেকে এনআইডি সেবার ৯০ ভাগ কাজ যাবে মাঠে

নির্বাচন কমিশন ভবন
নির্বাচন কমিশন ভবন

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সেবা আগামী বছরের শুরু থেকে চার ভাগে সম্পন্ন করা হবে। এর মাধ্যমে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সেবা সংক্রান্ত কাজ বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে।

ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সাধারণ মানের সংশোধনের কাজ উপজেলাতে হবে। মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করা হবে যথাক্রমে জেলা ও বিভাগে। আর অতি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনের কাজগুলো সম্পন্ন করা হবে কেন্দ্রীয়ভাবে। সে ক্ষেত্রে নতুন ভোটার হওয়া এবং জাতীয় পরিচয় সংশোধন ও মুদ্রণ সংক্রান্ত ৯০ ভাগ কাজই ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মাঠ পর্যায়ে চলে যাবে।

এ বিষয়ে নিবন্ধন অনুবিভাগের উপমহাপরিচালক আবদুল বাতেন প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে এনআইডি মুদ্রণ ও সংশোধন সংক্রান্ত প্রায় সব কাজই কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় হয়ে থাকে। এতে ঢাকার আশপাশ ও বাইরের জেলার লোকজনকে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয়। নিবন্ধন সেবার কাজ বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে সাধারণ মানুষ এই হয়রানি থেকে রেহাই পাবে।

নিবন্ধন সেবা বিকেন্দ্রীকরণের জন্য ইসির নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে—‘নামের বানান ভুল’ জাতীয় ত্রুটি সংশোধনের কাজ উপজেলাতে করা হবে। নাম ও জন্ম তারিখ পরিবর্তনের কাজগুলো করবে জেলা অফিস। আর বাবা-মায়ের নাম পরিবর্তনের আবেদন নিষ্পত্তি করবে বিভাগীয় অফিস। আর এসব কাজের কোনোটি নিষ্পত্তি করা না গেলে মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলো সেই কাজ কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেবে। এ ছাড়া মাঠ পর্যায়ের সংশোধন সংক্রান্ত সব কাজ কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ থাকবে।

ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কয়েক মাস আগে বিভাগীয় অফিসগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে এনআইডি পুনর্মুদ্রণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং তারা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। একই দায়িত্ব আগামী ২০ এপ্রিল থেকে দেওয়া হবে জেলা অফিসগুলোকে। তারা সেই দায়িত্ব সফলভাবে পালন করতে পারলে আগামী আগস্ট থেকে একই দায়িত্ব উপজেলা কার্যালয়গুলোকে দেওয়া হবে। একইভাবে আগামী জুন থেকে বিভাগীয় কার্যালয়গুলোকে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের দায়িত্ব দেওয়া হবে। বিভাগীয় কার্যালয় এ কাজে উত্তীর্ণ হলে পর্যায়ক্রমে একই দায়িত্ব জেলা ও উপজেলা অফিসগুলোকেও দেওয়া হবে।

আবদুল বাতেন প্রথম আলোকে বলেন, এই কাজের জন্য সফটওয়্যার ও নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিভাগ, জেলা ও উপজেলা কার্যালয়গুলো প্রাথমিক কাজ সফলভাবে করতে পারলে আগামী বছরের শুরু থেকে নিবন্ধন সেবা সংক্রান্ত সব কাজ গুরুত্ব অনুপাতে তাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।

ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে ইসিকে প্রতি মাসে এনআইডি সংশোধন ও হারানো সংক্রান্ত ৬০ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করতে হয় এবং এর ৯০ ভাগ কাজই কেন্দ্রীয়ভাবে করতে হয়।