র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ 'মৌখিকভাবে' জানিয়ে 'লিখিতভাবে' প্রত্যাহার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে গত সোমবার রাতে মৌখিকভাবে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ জানিয়েছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ১৯ জন শিক্ষার্থী। তবে এক দিন পার হওয়ার আগেই সেই অভিযোগ লিখিতভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তাঁরা! মৌখিকভাবে দেওয়া এ অভিযোগকে ‘অতিরঞ্জিত’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয় সূত্র জানায়, সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ‘র‌্যাগ’ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের সামনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ‘র‌্যাগিংয়ের ঘটনার’ মৌখিক জবানবন্দি দেন। সেই জবানবন্দি মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা হয়।

জবানবন্দিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, সোমবার বিকেলে বিভাগের ক্রিকেট খেলা ছিল। খেলায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনের অংশগ্রহণের কথা থাকলেও তিনি খেলায় অংশ নেননি। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন প্রথম বর্ষের কিছু শিক্ষার্থী। এ সময় সেখানে দ্বিতীয় বর্ষের ১২ জন শিক্ষার্থী যান। তাঁরা ইমরানকে খেলায় অংশ না নেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেন। ইমরান কোনো উত্তর না দিলে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাঁকে গালাগাল দেন। পরে ইমরানসহ প্রথম বর্ষের সব শিক্ষার্থীকে পরের দিন খেলার মাঠে উপস্থিত থাকার কথা বলে চলে যান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের কাছে লিখিতভাবে জানিয়ে এই অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন প্রথম বর্ষের ১৯ জন শিক্ষার্থী। মৌখিকভাবে দেওয়া জবানবন্দি ‘অতিরঞ্জিত’ ছিল—এই কথা উল্লেখ করে অভিযোগ তুলে নেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, সেদিন রাতের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। ভুল বোঝাবুঝি থেকে তাঁরা প্রক্টরের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছিলেন। এ অভিযোগ আমলে না নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে অনুরোধও করেছেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা সোমবার রাতে মৌখিকভাবে একটি অভিযোগ করেছিলেন। পরে লিখিতভাবে এ অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তাঁরা। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, মৌখিক অভিযোগ অতিরঞ্জিত ছিল। তাই এ বিষয়ে প্রক্টরিয়াল বডি কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশ হলো কখনো কোনো মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রভাবিত করলে তাঁদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।’