শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ উল্লাস

ভটভটিতে গত রোববার শিশুদের বৈশাখী উৎসব।  প্রথম আলো
ভটভটিতে গত রোববার শিশুদের বৈশাখী উৎসব। প্রথম আলো

একটি ভটভটিতে ঠাসাঠাসি করে উঠেছে একদল শিশু। কেউবা আবার বাদুড়ের মতো ঝুলে আছে। এসব শিশুর সবার মাথায় লাল গামছা বাঁধা। ভটভটির ওপরে একটি মাইক। সেটিতে বাজছে হিন্দি গান। সে গানের তালে তালে ভটভটির ওপরই নাচানাচি-চিৎকার-হইচইয়ে মেতে আছে শিশুরা। পয়লা বৈশাখে রাজশাহীর বেশ কয়েকটি এলাকায় ভটভটিতে চড়ে শিশুদের এমন ঝুঁকিপূর্ণ উল্লাসে মেতে থাকতে দেখা গেছে ।

রাজশাহীর চারঘাটে একটি ভটভটি থামিয়ে সেটিতে থাকা শিশু–কিশোরদের পরিচয় জেনে দেখা গেল, তারা জেলার বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তারা নিজেরা চাঁদা তুলে মাইকসহ ভটভটি ভাড়া করে নববর্ষ উদ্‌যাপন করতে বের হয়েছে। সারা দিনের জন্য ৮০০ টাকায় ভটভটিটি ভাড়া করেছে তারা। তাদের কাছে চাঁদার একটি তালিকাও পাওয়া গেল। এতে তাদের ২০ জনের নামের একটি তালিকা রয়েছে। সর্বোচ্চ ১৫০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিয়েছে তারা। চাঁদার তালিকায় রয়েছে শাহরিয়ার, কাজল, জাহিদ, ইমন, জয়, তারিক, মেহেদি, সাকিল প্রমুখ।

ভটভটি নিয়ে তারা কেন ঘুরে বেড়াচ্ছে জানতে চাইলে তিন-চারজন একসঙ্গে বলে ওঠে, নববর্ষের আনন্দ করার জন্য নিজেরাই ভটভটি, মাইক ভাড়া করে বাঘা ও চারঘাট উপজেলার সব এলাকা ঘুরছে।

রাস্তার পাশের লোকজন পথ চলতে থমকে দাঁড়িয়ে শিশুদের এভাবে ভটভটিতে চেপে ঘুরে বেড়াতে দেখছে। একজন পথচারী বলেন, ছোট বাচ্চারা যেভাবে জীবনের ঝুঁকিয়ে ভটভটিতে নাচানাচি করছে, যেকোনো সময় তো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আরেকজন পথচারী বলেন, নিশ্চয়ই ওরা বাবা-মাকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। এরা তো ঠিকমতো জানেও না বাংলা নববর্ষ কী।

যোগাযোগ করা হলে মনিগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু মনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নাম শুনে চিনতে পারছেন, ওরা তাঁর বিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। তারা বিদ্যালয় থেকে একসঙ্গে গেলেও এর সঙ্গে বিদ্যালয়ের কোনো যোগ নেই। ওরা নিজেরাই এই উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ কিছুই জানে না।