জব্দ করা মালামাল কোটি টাকায় বিক্রি

>

তুরাগ নদের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বিআইডব্লিউটিএর অভিযান। গতকাল দুপুরে টঙ্গীর বড় দেওড়া এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
তুরাগ নদের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বিআইডব্লিউটিএর অভিযান। গতকাল দুপুরে টঙ্গীর বড় দেওড়া এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

বিআইডব্লিউটিএর গতকালের অভিযানে তুরাগের উভয় তীরের প্রায় সাড়ে চার একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে।

তুরাগ নদের দুই তীরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চালানো অভিযানে জব্দ করা মালামাল নিলামে ১ কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল বুধবারের অভিযানে ছোট-বড় ৭০টি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

গতকাল রাজধানীর তুরাগ থানার বেড়িবাঁধ–সংলগ্ন কামারপাড়া ও গাজীপুরের টঙ্গীর বড় দেওড়া এলাকায় একযোগে এ অভিযান চালায় বিআইডব্লিউটিএ। অভিযানে তুরাগের উভয় তীরের প্রায় সাড়ে চার একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে।

গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে চালানো অভিযানে গতকালই সর্বোচ্চ টাকার মালামাল নিলামে বিক্রি করা হয়। এর আগে ৯ এপ্রিল ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া সেতু ও পঞ্চবটী এলাকায় তুরাগতীরে চালানো অভিযানে জব্দ করা পাথর, বালু ও একটি এক্সকাভেটর নিলামে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

গতকাল সকাল সাড়ে নয়টার দিকে প্রত্যাশা সেতুর পূর্ব দিকে ও বড় দেওড়া এলাকায় একযোগে অভিযান শুরু হয়। এ সময় তুরাগের দুই তীরে থাকা তিনটি দোতলা বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর কামারপাড়া এলাকায় তুরাগতীর ঘেঁষে ডাকবাংলোর মতো করে নির্মিত একটি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। স্থাপনাটি উচ্ছেদের পর এইচ আর হারুন নামের এক ব্যক্তি কাগজপত্র নিয়ে এসে দাবি করেন, যথাযথ আইন মেনে তিনি জায়গাটি কিনেছেন। তখন বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা বলেন, জলাধার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী জলাশয় ভরাট করা বেআইনি। সেখানে স্থাপনা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। পরে ওই ব্যক্তি চলে যান।

এরপর বেড়িবাঁধ–সংলগ্ন জায়গা ও তুরাগতীর ভরাট করে গড়ে তোলা বালু ও পাথরের গদিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে জব্দ করা বালু, পাথর ও মাটি নিলামে বিক্রি করা হয়।

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ও ঢাকা নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এ কে এম আরিফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নিলামে বিক্রি করা মালামাল ১৫ দিনের মধ্যে সরিয়ে নিতে হবে। তা না করতে পারলে এই মালামাল আবার নিলামে তোলা হবে।

বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নূর হোসেন বলেন, বুধবারের অভিযানে তিনটি দোতলা, ছয়টি একতলা ও নয়টি আধা পাকা ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ১৩টি টিনশেড ঘর, ১০টি সীমানাদেয়াল ও ২৯টি টিনের ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

গাছ লাগিয়ে তুরাগতীর দখলের চেষ্টা

সরেজমিনে দেখা গেছে, বেড়িবাঁধ–সংলগ্ন কামারপাড়া এলাকায় বেশির ভাগ দখলদার গাছ লাগিয়ে তুরাগতীরের ভূমি দখল করেছেন। কেউ কেউ গাছের চারা রোপণ করে বাগানবাড়ি বানানোর চেষ্টা করেছেন। আবার অনেকে সারি সারি গাছ লাগানোর পর সীমানাদেয়াল নির্মাণ করেছেন। বিআইডব্লিউটিএর অভিযানে স্থাপনা উচ্ছেদের পাশাপাশি গাছগুলোও ভেঙে দেওয়া হয়।

এর কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ বলছে, দখলদারেরা গাছকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। তাই ওই সব গাছ ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঢাকার চারপাশে নদ-নদীর তীরে হাঁটার পথ নির্মাণের সময় নতুন করে তুরাগতীরে পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগানো হবে।