পা পেলেন রাসেল, আবার আয়ের স্বপ্ন
বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকারের কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয়েছে। পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) তাঁর এই পা সংযোজন করা হয়।
কৃত্রিম পা সংযোজনের পর রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আশা করি, এই পা লাগানোর মাধ্যমে আমি আবার উপার্জন করতে পারব।’
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সাভারে সিআরপিতে রাসেল সরকারের কৃত্রিম পা লাগানো হয়। সিআরপির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজন বিভাগের প্রধান শফিক আহমেদের নেতৃত্বে রাসেলের পা লাগানো হয়।
সিআরপির ওই কর্মকর্তা জানান, ১১ এপ্রিল তাঁর পা লাগানোর প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছিল। আজকে পা লাগিয়ে তাঁকে হাঁটানোও হয়েছে। এটা চার সপ্তাহের প্রক্রিয়া। এর মধ্যে তাঁকে হাঁটানোর অনুশীলন করানো হবে। এই চার সপ্তাহ রাসেল সিআরপিতে থাকবেন। তাঁর পা লাগানোসহ এখানে থাকার সব খরচই সিআরপি বহন করছে।
রাসেল সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে তো ক্রাচে ভর দিয়ে চলতে হতো, এখন পা লাগানোয় ক্রাচ লাগবে না, তাই ভালো লাগছে। এখানে বলা হয়েছে, নতুন পায়ের সঙ্গে যত দ্রুত অভ্যস্ত হতে পারব, ওনারা আমাকে তত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেবেন। আশা করছি, এই পা লাগানোর মাধ্যমে আমি আবার উপার্জন করতে পারব।’
রাসেল সরকার একটি প্রতিষ্ঠানের ভাড়া গাড়ি চালাতেন। গত বছরের ২৮ এপ্রিল কেরানীগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ীর হানিফ উড়ালসড়কে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারান তিনি।
ঘটনার পর রাসেল বলেছিলেন, ফেরার সময় যাত্রাবাড়ীতে গ্রিন লাইন পরিবহনের একটি বাস তাঁর গাড়িকে ধাক্কা দেয়। পরে গাড়ি থামিয়ে বাসের সামনে গিয়ে বাসচালককে নামতে বলেন তিনি। তখন তাঁর সঙ্গে বাসচালকের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাসচালক গাড়ি চালাতে শুরু করেন। রাসেল সরতে গেলে উড়ালসড়কের রেলিংয়ে আটকে যান। এ সময় রাসেলের পায়ের ওপর দিয়ে বাস চলে যায়। এরপর অস্ত্রোপচার করে তাঁর বাঁ পা কেটে ফেলা হয়।
রাসেলের পা হারানোর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনজীবী উম্মে কুলসুমের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে প্রয়োজন হলে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার এবং কাটা পড়া বাঁ পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচ দিতে ওই পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ রাসেলকে ১০ এপ্রিল ৫ লাখ টাকা দেয়। বাকি টাকা এক মাসের মধ্যে দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।