ছোট ভাইকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা, বড় ভাইসহ আটক ৩

নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্র ছোট ভাইকে অপহরণ করে মুঠোফোনে বাবার কাছে ৬০ লাখ মুক্তিপণ দাবি করেছে ‘আপন বড় ভাই’। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ আরেক বড় ভাই থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন। কিন্তু পুলিশ-র‌্যাবের তদন্তে বেড়িয়ে আসে ভিন্ন চিত্র।

অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ তাঁর দুই সহযোগীকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাট এলাকা থেকে আটক করে র‌্যাব-পুলিশের একটি দল। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় অপহৃত স্কুল শিক্ষার্থীকে। আটকেরা হলেন, অপহৃত স্কুলছাত্রের বড় ভাই মারুফ জামিল (৩০) ও তাঁর দুই সহযোগী সোহান (২৬) ও জিসান (৩০)।

অপহৃতের নাম ফাহাদ জামিল। সে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ও শহরের ভূঁইয়াপাড়া এলাকার মনির হোসেনের ছেলে। গত বুধবার অপহরণের ঘটনা ঘটে। 


নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার সকালে স্কুলের উদ্দেশ্য বাসা থেকে বের হয় ফাহাদ জামিল। সন্ধ্যা হলেও স্কুল থেকে বাসায় ফেরেনি সে। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অপরিচিত একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে ফাহাদ জামিলের অপহরণের বিষয়টি জানিয়ে তার বাবা মনির হোসেনের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৬০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। রাত ৯টার মধ্যে মুক্তিপণের পুরো টাকা দেওয়া না হলে ফাহাদকে হত্যার করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকিও দেয় অপহরণকারীরা। এরপর অপহরণকারীরা তাদের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ করে দেয়।

মিজানুর রহমান জানান, বুধবার রাতে ফাহাদের আরেক বড় ভাই মাসুম জামিল অপহরণের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় জিডি করেন। সে সময় তাঁর সঙ্গে আটক মারুফ জামিলও ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর থানার পরিদর্শক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল র‌্যাবের প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের অবস্থান জানার চেষ্টা করে। অপহরণকারীরা প্রথমে ফাহাদকে অপহরণ করে সদর উপজেলার ফতুল্লার লালপুর ও পরে মুন্সিগঞ্জ এলাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে র‌্যাবের সহায়তায় মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটের সামনে থেকে ফাহাদকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে আটক করা হয় অপহৃতের বড় ভাই মারুফ জামিল ও তার দুই সহযোগী সোহান ও জিসানকে।

ওসি কামরুল ইসলাম আরও জানান, মারুফ জামিল পেশায় হোসিয়ারি ব্যবসায়ী। কী কারণে তাঁর আপন ছোট ভাইকে অপহরণ করল তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।