সেই আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে গোটা হল সংসদ

গত বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল সংসদের জরুরি সভায় হট্টগোল হয়। হল সংসদে সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদকের (জিএস) সামনে বিবাদে লিপ্ত হন সংসদের সংস্কৃতি সম্পাদক ইমরান হাসান ও সমাজসেবা সম্পাদক আবুল হোসেন। আবুল হোসেন একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। অভিযোগ ওঠে, সেই সভায় আবুলের সঙ্গে ইমরানের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ইমরান আবুলের ওপর চেয়ার তুলে চড়াও হন। শনিবার আবুলের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন হল সংসদের ১০ জন প্রতিনিধি।

হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান মিজান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হল সংসদের বুধবারের জরুরি সভায় পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আলোচনায় ভিপি শহিদুল হক শিশির, সংস্কৃতি সম্পাদক ইমরান হাসান ও সমাজসেবা সম্পাদক আবুল হোসেন মতব্যক্ত করেছিলেন। আলোচনার একপর্যায়ে ইমরান ও আবুলের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। আবুল ইমরানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, হুমকি দেন ও চেয়ার ছুড়ে মারতে উদ্যত হন। এর বিচার চেয়ে হল সংসদের সভাপতি বরাবর ইমরান অভিযোগও দাখিল করেন।’

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের এ ঘটনা নিয়ে গত শুক্রবার প্রথম আলোতে ‘মুহসীন হল সংসদে হট্টগোল, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী লাঞ্ছিত’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। সেখানে হল সংসদের সংস্কৃতি সম্পাদক ইমরান হাসান দাবি করেন, তিনি নন, বরং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আবুলই চেয়ার তুলে তাঁর দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন। তবে একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কীভাবে তাঁকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করলেন? এ প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারেননি। আর হল সংসদের ভিপি শহিদুল হক শিশির বলেছিলেন, বুধবার রাতে হল সংসদের ওই সভায় ‘একটু কথা-কাটাকাটি’ হয়েছিল।

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল সংসদের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, গণমাধ্যমে দেওয়া আবুল হোসেনের অভিযোগ ও বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, নাটকীয়, মিথ্যা। যা সত্য ঘটনাকে সম্পূর্ণ আড়াল করে হল সংসদকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে।


বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, আবুলের বক্তব্য হল সংসদের সুনাম ক্ষুণ্ন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আস্থার প্রতি চরম আঘাত হেনেছে।

বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন হল সংসদের সহসভাপতি শহিদুল হক শিশির, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মিজান, সাহিত্য সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন জীবন, সংস্কৃতি সম্পাদক ইমরান হাসান, বহিরঙ্গন ক্রীড়া সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া সম্পাদক শাহরিয়ার সনেট এবং সদস্য আবদুর রহমান, শাহ ইবনে সোয়াদ, জাহাঙ্গীর আলম ও মুজাহিদুল ইসলাম হিমেল।

প্রসঙ্গত, গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল সংসদে ১৩টি পদেই জিতেছে ছাত্রলীগের প্যানেল। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সুপারিশে তিনি হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল সংসদে ছাত্রলীগের প্যানেলে সমাজসেবা সম্পাদক পদে প্রার্থী হন।