চিকিৎসা কর্মকর্তার মৃত্যু হয় চোরের শাবলের আঘাতে

মারুফা আক্তার
মারুফা আক্তার
>

• ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে খুন হন মারুফা
• চোর মহসিন বারান্দা দিয়ে মারুফার ঘরে ঢোকেন
• দেখে ফেলায় শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করেন মহসিন
• ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে মহসিনকে গ্রেপ্তার করা হয়
• মহসিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন

বরিশাল নগরে কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা কর্মকর্তা মারুফা আক্তারের (৪০) হত্যার সূত্র উদ্‌ঘাটিত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। তারা বলছে, চোরের শাবলের আঘাতে মারুফা মারা যান।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মহসিন শেখ (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি পিরোজপুর জেলার খানাকুনিয়ারী গ্রামের বাসিন্দা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ আলম মুনসি বলেন, মহসিন গতকাল বিকেলে বরিশাল নগর বিচারিক হাকিম আনিসুর রহমানের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

নিহত মারুফা নগরের বিমানবন্দর থানার কাশিপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা ছিলেন। পুলিশ জানায়, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ-সংলগ্ন লুৎফর রহমান সড়কের ভাড়াবাড়িতে খুন হন মারুফা। ঘটনার রাতে তিনি বাড়িতে একা ছিলেন। তাঁর স্বামী জহিরুল হায়দার চৌধুরী ঢাকায় চাকরি করেন। এ ঘটনায় মারুফার বড় ভাই জামাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

মহসিনের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মহসিন পেশাদার চোর। তিনি ভোলায় থাকেন। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মহসিন ভোলা থেকে বরিশাল এসে নথুল্লাবাদের একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। রাত একটার পর মহসিন প্রথমে মারুফার পাশের একটি বাড়ির তালা ভেঙে মুঠোফোন ও টাকা চুরি করেন। এরপর পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে মারুফার ফ্ল্যাটের বারান্দা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় তাঁর হাতে একটি শাবল ছিল।

মহসিন স্টিলের আলমারি খুলে তল্লাশি শুরু করেন। এ সময় শব্দ পেয়ে মারুফার ঘুম ভেঙে গেলে তিনি (মারুফা) ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় মহসিন তাঁর হাতে থাকা শাবল দিয়ে মারুফার মাথায় আঘাত করেন। এতে মারুফা লুটিয়ে পড়েন। এরপর মহসিন দ্রুত বারান্দা দিয়ে পাশের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে যান এবং ফজরের আজান পর্যন্ত সেখানে থাকেন। এরপর আজানের সময় ওই ভবন থেকে নেমে লঞ্চে করে ভোলায় চলে যান।

গতকাল শনিবার বরিশাল বিমানবন্দর থানার পুলিশ মহসিনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে। বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রহমান বলেন, ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানা এলাকা থেকে মহসিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক হাসান বশির বলেন, মারুফার বাড়িতে চুরির আগে মহসিন পাশের আরেক বাড়িতে চুরি করেন। সেখান থেকে তিনি মুঠোফোন ও টাকা চুরি করে নেন। সেই মুঠোফোনের সূত্র ধরে কয়েক মাস আগে মহসিনকে শনাক্ত করা হয়। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করতে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়।