রূপগঞ্জে গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ২

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার সাওঘাট এলাকায় এক বাড়িতে তিতাস গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণে দুজন নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে ওই দোতলা বাড়ির নিচতলার দেয়াল উড়ে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার সাওঘাট এলাকায় এক বাড়িতে তিতাস গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণে দুজন নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে ওই দোতলা বাড়ির নিচতলার দেয়াল উড়ে গেছে। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার সাওঘাট এলাকায় একটি বাসায় গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণ ঘটে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত সাতজন। বিস্ফোরণে ওই দোতলা বাড়ির নিচতলার দেয়াল উড়ে ৩০০ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

গ্যাসের হাইপ্রেশার পাইপলাইন থেকে নেওয়া অবৈধ সংযোগের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন রাকিব (২৫) ও শামীম (৩০)। রাকিব ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কয়া এলাকার রহিম বিশ্বাসের ছেলে। শামীম মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে। তাঁরা স্থানীয় নেক্সট এক্সেসরিজ লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

আহত সাতজন হলেন তরিকুল ইসলাম (২৮), লিয়াকত আলী (৩৫), হজরত আলী (৩০), আরিফ, আনোয়ার হোসেন, ফারুক মিয়া ও আরিফুর রহমান (৩৬)। হতাহত ব্যক্তিরা সাওঘাট এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে একসঙ্গে থাকতেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, উপজেলার সাওঘাট এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে একটি দোতলা বাড়ির নিচতলায় রাত সোয়া তিনটার দিকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বাড়িটি রাবেয়া আক্তার মিলি নামের এক আইনজীবীর। বিস্ফোরণে ওই দোতলা বাড়ির নিচতলার পুরো দেয়াল বিদীর্ণ হয়। দেয়ালের অংশ উড়ে অনেক দূরে গিয়ে পড়ে। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোতলার অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আশপাশের লোকজন গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে। তিনজনকে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এঁদের মধ্যে শামীম ও রাকিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে লিয়াকত ও আরিফের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আজ সোমবার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে হতাহত ব্যক্তিদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনকে বার্ন ইউনিটে ও দুজনকে ক্যাজুয়ালটিতে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত দুজনের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

বাড়ির মালিক রাবেয়া আক্তার মিলি বলেন, ‘অন্যরা যেভাবে গ্যাস সংযোগ নিয়েছে, আমিও সেভাবেই নিয়েছি।’ তিনি দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হতে পারে।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক রফিকুল হক বলেন, তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনে বিস্ফোরণে দুজন মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই তাঁদের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁ জোনের সুপার ভাইজার ইসমাইল হোসেন বলেন, আগেও এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। হাইপ্রেশার লাইন থেকে অবৈধভাবে গ্যাসের সংযোগ নেওয়া এবং শবে বরাত উপলক্ষে সব ধরনের মিল-কারখানা বন্ধ থাকায় গ্যাসের প্রেশার বেশি ছিল। গ্যাস পুরো ভবনের ভেতরে ছড়িয়ে ছিল। আগুনের সংস্পর্শে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। খবর পেয়ে ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ ও কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।