ঢাবির টিএসসিতে আড্ডা দিতে এসে বিপাকে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি)। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি)। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গতকাল সোমবার দুপুরে আড্ডা দিতে এসেছিলেন রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ও এক ছাত্র। আড্ডার একপর্যায়ে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি তাঁদের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তখন ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র।

পরে ছাত্রলীগের এক সাবেক কেন্দ্রীয় নেতার মধ্যস্থতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ওই তিন শিক্ষার্থীকে থানায় সোপর্দ করে। তবে কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ তাঁদের ছেড়ে দেয়। আর ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরীর সহায়তায় সটকে পড়েন অভিযুক্ত ব্যক্তি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই তিন শিক্ষার্থী বলেন, তাঁরা টিএসসিতে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তাজুল ইসলাম সেখানে এসে হাঁটাহাঁটি করছিলেন ৷ তিনি এক ছাত্রীকে লক্ষ্য করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছিলেন। বুঝতে পেরে তিন শিক্ষার্থী উঠে দাঁড়ালে তাজুল টিএসসির ফটকের দিকে হাঁটা শুরু করেন। টিএসসির ফটকে গিয়ে তিন শিক্ষার্থী মিলে তাজুলকে চড়-থাপ্পড় দেন। খবর পেয়ে লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে যান তাজুল ইসলামের আত্মীয় রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী। আগেই ঘটনাস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কয়েকজন সদস্য। তিন শিক্ষার্থী ও তাজুলের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন রিয়াজ। প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের ওই তিন শিক্ষার্থীকে থানায় দিতে বলেন তিনি। প্রক্টরিয়াল বডি তিন শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করলেও ছাত্রলীগের ওই সাবেক নেতা তাজুলকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

তবে তাজুল ইসলাম অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি টিএসসিতে দাঁড়িয়ে প্যান্টের পকেটে হাত রেখে ফোনে কথা বলছিলাম। কথা শেষে আমি টিএসসির বাইরের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন ওই তিন শিক্ষার্থী আমাকে পেছন থেকে ডাকেন এবং মারধর করেন।’ আর রিয়াজের দাবি, ‘তাজুল এ ধরনের কাজ করার মতো লোক নন। ওই শিক্ষার্থীরা হয়তো তাঁকে ভুল বুঝেছেন।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনই বহিরাগত। কখনো এ ধরনের ঝুটঝামেলায় জড়াবে না, এই মর্মে মুচলেকা দেওয়ায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আরিফুর রহমান বলেন, একজন ছাত্র ও দুজন ছাত্রীকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছিল। তবে কোনো অভিযোগ না থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পরামর্শে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।