পদ্মাসেতুর ১১তম স্প্যান বসেছে

পদ্মা সেতুর ওপর মঙ্গলবার সকালে ১১তম স্প্যান বসানো হয়। ছবি: সংগৃহীত
পদ্মা সেতুর ওপর মঙ্গলবার সকালে ১১তম স্প্যান বসানো হয়। ছবি: সংগৃহীত

পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিয়ারের ওপর ১১তম স্প্যান বসানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সেতুর ১ হাজার ৬৫০ মিটার এখন দৃশ্যমান। আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টার এই স্প্যান বসানো হয়। পদ্মাসেতু প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। গত ২২ মার্চ পদ্মা সেতুর ৩৫ ও ৩৪ নম্বর পিয়ারের ওপর নবম স্প্যানটি বসানো হয়। ওই দিন ১ হাজার ৩৫০ মিটারের সেতু দৃশ্যমান হয়। ১০ এপ্রিল মাওয়া প্রান্তে ১৩ ও ১৪ নম্বর পিয়ারের ওপর ১০ম স্প্যানটি বসানো হয়। এর মধ্য দিয়ে সেতু এখন ১ হাজার ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যে রূপ নেয়। আজ বসানো হয়েছে ১১তম স্প্যান। এপ্রিলের শেষ দিকে আরেকটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

দ্বিতল পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। খুঁটির ওপর ইস্পাতের যে স্প্যান বসানো হবে, এর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। পুরো সেতুতে মোট পিয়ারের সংখ্যা ৪২। প্রতিটি পিয়ারে রাখা হয়েছিল ছয়টি পাইল। একটি থেকে আরেকটি পিয়ারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই সেতু নির্মিত হবে। স্প্যানের অংশগুলো চীন থেকে তৈরি করে সমুদ্রপথে জাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। জোড়া লাগানো হয় মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে।

পিয়ার ও স্প্যানের পাশাপাশি সেতুতে রেলপথের জন্য স্ল্যাব বসানোর কাজ চলছে।

বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।