নুসরাত হত্যায় আ.লীগের সাংসদ-নেতারা জড়িত: রিজভী

রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যায় আওয়ামী লীগের সাংসদ এবং ‘বড় বড় নেতারা’ জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তাঁর অভিযোগ, এ হত্যায় জড়িত সাংসদ, নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে সরকার।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘সোনাগাজীর নুসরাতকে নিপীড়ন চালিয়ে তাঁর মুখ বন্ধ করতে গায়ে আগুন দিয়ে বর্বর কায়দায় হত্যার ঘটনায় সেখানকার আওয়ামী লীগের মিডনাইট এমপি, আওয়ামী সভাপতি থেকে শুরু করে বড় বড় নেতারা জড়িত। তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন এসপি (জেলা পুলিশ সুপার) থেকে থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) পর্যন্ত।’

ফেনী জেলায় সংসদীয় আসন তিনটি। এর মধ্যে ফেনী-১ আসনে জাসদের শিরীন আখতার এবং ফেনী-৩ আসনে জাতীয় পার্টির সাংসদ মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। আর ফেনী-২ আসনটির সাংসদ আওয়ামী লীগের নিজাম উদ্দিন হাজারী। সোনাগাজী ও দাগনভূঞা আসন নিয়ে গঠিত ফেনী-৩ আসনটি।

বিএনপির নেতা রিজভীর বক্তব্য, ‘তাদের এমপি-নেতা ও পুলিশ প্রশাসনকে জনরোষ থেকে বাঁচানোর জন্য এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। সোনাগাজীর ঘটনার মতোই ক্ষমতাসীন দলের বেপরোয়া নেতা-কর্মীরা গোটা দেশকে ধর্ষণ উপত্যকায় পরিণত করেছে।’

আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দেয় পাঁচ সন্ত্রাসী। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে সন্ত্রাসীরা চাপ দেয় নুসরাতকে। অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত। দেশজুড়ে আলোড়ন তোলা এ হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত এজাহারভুক্ত ৮ আসামিসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রিজভীর মতে, দেশে এখন ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ এর চেয়েও খারাপ অবস্থা। ওই সময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। রিজভী বলেন, ‘ প্রতিদিন একটির পর একটি লোম শিউরে ওঠার মতো ঘটনা ঘটলেও গণবিচ্ছিন্ন এই সরকারের কোনো বিকার নেই। এভাবে দেশ চলতে পারে না।’

রিজভী বলেন, ‘এসব অপকর্ম করে নির্বিঘ্ন থাকার জন্য জনগণের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর, আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জোর করে বন্দী রেখে বিনা চিকিৎসায় প্রাণনাশের চেষ্টা চলছে।’